সব কিছু যেন ভেঙে গায়ে পড়ছে :শিল্পী

প্রকাশ | ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) সংবাদদাতা
শিল্পী আক্তার
'সবকিছু যেন ভেঙে গায়ে পড়ছে। প্রায়ই রাতে ঘুমের ঘরে চিৎকার করে উঠি। সেই দিনের কথা মনে পড়লে আজও শরীর শিউরে উঠে। ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে অন্ধকারে তিন দিন, তিন রাত চাপা পড়েছিলাম। বের হওয়ার সুযোগ ও সাধ্য কোনোটাই ছিল না। চিৎকার দিলেও কেউ শোনেনি। ক্ষুধা আর চাপা পড়া হাতের যন্ত্রণায় ছটফট করেছিলাম।' ২০১৩ সালে রানা পস্নাজা ধসে হাত হারানো গার্মেন্টশ্রমিক শিল্পী আক্তার এভাবেই তুলে ধরেন মৃতু্যর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া সেই দুঃসহ দিনের স্মৃতি। সেই স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে। ঘুমের ঘরেও পিছু ছাড়ে না সেই দুঃস্বপ্ন। শিল্পীর বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার তারাইল গ্রামে। স্বামী-সন্তান নিয়ে জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় যান। পরে সাড়ে তিন হাজার টাকা বেতনে সাভারের রানা পস্নাজার চতুর্থ তলায় অবস্থিত ফ্যানটম ট্যাক লিমিটেড পোশাক কারখানায় ফিনিশিং হেলপার হিসেবে কাজ নেন। দুর্ঘটনার ছয় মাস আগে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ভবন ধসের আগের দিন তার স্বামী অসুস্থ থাকার কারণে ডিউটি করতে যাননি। প্রতি মাসের ২৪ তারিখে ওভারটাইমের বেতনশিট তৈরি করা হয়। তাই সবার মতো শিল্পীও সেদিন অসুস্থ স্বামীকে বাসায় রেখে হাজিরা দিতে কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু সব কিছুই যেন ওলট-পালট হয়ে যায়। মঙ্গলবার শিল্পী আক্তারের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, ডান হাত হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। এক হাত দিয়েই রান্না-বান্নাসহ সংসারের যাবতীয় কাজ করছেন। এখনো তার শরীরে নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। নিয়মিত খেতে হয় ওষুধ।