দৌলতপুরে ২ কোটি টাকার প্রতারণা

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
দৌলতপুরের ভররা গ্রামে প্রতারণার দায়ে আটক ২ ব্যক্তি -যাযাদি
উচ্চ সুদের লোভ দেখিয়ে মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকচক্র। উপজেলার খলসী ইউনিয়নের ভররা গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় নিউ সমিতি নামে কথিত এনজিওর মাধ্যমে নিরীহ মানুষ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয় সমিতির নির্বাহী পরিচালক শাহিনুর ইসলাম দরজী (৩৫) ও তার সঙ্গীরা। এতে ধারদেনার মাধ্যমে লগ্নি করে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার আসল ও সুদের টাকা না পাওয়ায় প্রতারণার শিকার সমিতির সদস্যরা শাহিনুর ইসলাম দরজী ও সহযোগী সাইদুর রহমানের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে দৌলতপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে দুই প্রতারককে আটক করে থানা নিয়ে আসে। প্রতারণার শিকার ভররা গ্রামের জুলু মলিস্নকের ছেলে জামাল মলিস্নক জানান, প্রতি মাসে এক লাখে ৫০ হাজার সুদ এই লোভে পড়ে আমি এ মাসেই ভররা নিউ সমিতির সদস্য হই। প্রথমে এক লাখ ৬০ হাজার জমা করি। পরে আমার ভাইদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে চার লাখ ৩০ হাজারসহ বিভিন্ন সময় রশিদের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমা করি। আমি এখন পর্যন্ত কোনো সুদের টাকা পাইনি। আমার মতো শত শত মানুষ প্রতারিত হয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। প্রতারণার শিকার আব্দুস ছালামের ছেলে আলতাফ হোসেন জানান, আমার বাড়ি পাশের একজন ওই নিউ সমিতিতে সদস্য হয়ে এক লাখে মাসে ৫০ হাজার টাকা লাভ পেয়েছে। আমিও তার কথা শুনে ভর্তি হয়ে প্রথমে এক লাখ জমা করি। পরে পর্যায়ক্রমে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা জমা করি। নকীমুদ্দিনের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী নুর ইসলাম জানান, আমি উচ্চ সুদের কথা শুনে ৩ লাখ টাকা রশিদের মাধ্যমে জমা করি। আমাকেও প্রতি মাসে লাখে ৫০ হাজার টাকা হারে সুদ দিয়েছে। প্রতি মাসে যে টাকা পেয়েছি সেই টাকা বাদ দিলে আরো এক লাখ ৬০ হাজার টাকা পাই। আটক মো: শাহিনুর ইসলাম দরজী ও সহযোগী সাইদুর রহমান জানান, গত ৮/৯ মাস পূর্বে ভররা নিউ সমিতি নাম দিয়ে একটি এনজিও করেছি। সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা আদায় করা হয়েছিল। কিছু টাকা সদস্যদের ফেরৎ দেওয়া হয়েছে। আমাকে পুলিশের ভয় দেখিয়ে ভররা গ্রামের জামাই রবংগাইলের মানু মিয়া এক বস্তায় ১৮ লাখ টাকা নিয়ে গেছে।সোমবার রাতে আরো ৯০ লাখ টাকা ছালার বস্তায় ভরে বাড়ির পাশে পুকুরে পানির নিচে লুকিয়ে রাখি। লুকিয়ে রাখা সেই টাকা কথা আমার সমিতির ম্যানেজার আব্বাস মিয়া জানতো। পরের দিন ( ২৩ এপ্রিল) পুকুরে রাখা সেই টাকা নিয়ে আব্বাস উধাও হয়ে গেছে বলে জানান নিউ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মো: শাহিনুর ইসলাম দরজী। এবিষয়ে দৌলতপুর থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) সুনীল কুমার কর্মকার জানান, ভররা গ্রামে নিউ সমিতির নির্বাহী পরিচালক শাহিনুর ইসলাম দরজী ও সাইদুর রহমানকে সমিতির সদস্যরা পাওনা টাকার দাবিতে তাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ভররা এলাকায় ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর প্রতারণার শিকার সমিতির সদস্যদের অভিযোগ শুনে প্রতারক দুইজনকে তাৎক্ষণিক আটক করা হয়। প্রতারণার শিকার ভররা গ্রামের জুলু মলিস্নকের ছেলে জামাল মলিস্নক বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। দৌলতপুর থানার মামলা নং-২৩। তারিখ-২৪/০৪/২০১৯ইং। এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।