শ্রীপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পে সাফল্য

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

জুলফিকার আলী, শ্রীপুর (মাগুরা)
'জমি আছে ঘর নেই-নিজ জমিতে গৃহনির্মাণ' প্রকল্পের অধীনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ 'আশ্রয়ণ প্রকল্প-২' এর আওতায় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলাতে ৭৪৪টি ঘর বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে অধিকাংশ ঘরের নির্মাণকাজ শেষপ্রান্তে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫২৮টি ঘর সুবিধাভাগী পরিবারের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরও করা হয়েছে। পাকা পোতা, টিনের চালা, টিনের বেড়া, সিমেন্টের খুঁটি ও বাথরুমসহ প্রতিটি ঘর নির্মাণ করতে সরকারিভাবে একলক্ষ টাকা হারে বরাদ্দ ধরা হয়েছে। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান ওই কাজের দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পর তিনি ঘরগুলোর গুণগত মান নির্ণয় করে দেখেন, যদিও কাজটি চ্যালেঞ্জিং তারপরও বরাদ্দকৃত অর্থে অনেক সুন্দর ও উন্নতমানের কাজ করা সম্ভব। তার পরিকল্পনাটিকে বাস্তবে রূপ দেয়ায় তার সততা ও নিষ্ঠার কথা সবার মুখে মুখে। কলেজ পাড়ার হতদরিদ্র অজিৎ দাস জানান, তিনি ফুটপাতে খোলা আকাশের নিচে বসে ছেঁড়া, কাটা জুতা, স্যান্ডেল মেরামত ও রং পলিশের কাজ করতেন। বসতবাড়িতে সামান্য কিছু জমি ও মাথা গোঁজার মতো ৮ টিনের জীর্ণশীর্ণ একটিমাত্র কাঁচা মাটির ছাপড়া আর ছাড়া কিছুই নেই তার। তিনি কোনোদিনও ভাবেননি যে, পাকা ঘরে ঘুমাবেন। কিন্তু ভাগ্যক্রমে ইউএনওর সানুগ্রহে হতদরিদ্র অজিৎ দাস ৭৪৪টি ঘরের মধ্যে তিনিও একটি ঘর পেয়েছেন। ঘর পেয়ে তিনি মহা খুশি। সম্প্রতি মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. আলী আকবর, পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজোয়ান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিনা মমতাজ সরেজমিনে ঘরগুলো পরিদর্শনপূর্বক ৫২৮টি ঘর সুবিধাভাগী পরিবারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছেন। তবে অবশিষ্ট ঘরগুলো কয়েক দিনের মধ্যেই ভুক্তভোগী পবিবারকে বুঝে দেয়া হবে বলে জানা যায়। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলারা রহমান এ বিষয়ে বলেন, এই ঘরগুলো নির্মাণ করতে সরকারি বরাদ্দ ছাড়া সুবিধাভোগী পরিবারের নিকট থেকে সামান্যতম কোনো সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করা হয়নি। বরং এক লাখ টাকায় টিনের বেড়া, সিমেন্টের খুঁটির পরিবর্তে পাকা বাথরুমসহ, পাকা পোতা, রং ও পলেস্টার করা ইটের দেয়ালঘর নির্মাণ করা বড়ই চ্যালেঞ্জের বিষয়। তারপরও বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, জেলা প্রশাসক, ইউপি চেয়ারম্যান, কাজের সাথে জড়িত কর্মকর্তাসহ স্থানীয় লোকজনদের সহযোগিতায় কাজটি সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। \হমাগুরা জেলা প্রশাসক মো. আলী আকবর এলাকা পরিদর্শন করে ঘরের কাজ সম্পর্কে বলেন, সৎ-সদিচ্ছা থাকলে সব কাজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব। দরকার সৎ-সাহস ও মনোবল। একজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইচ্ছা করলে এলাকায় অনেক ভাল ভাল কাজ করতে পারেন। ঘরগুলো দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, যতটুকু দেখেছি ঘরগুলোর নির্মাণকাজ যথেষ্ট ভাল হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের মনকে জয় করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও ভাল কাজ করতে গিয়ে ইউএনওকে অর্থনৈতিকভাবে একটু বেগ পেতে হয়েছে তারপরও বলব তিনি যা করেছেন ভালই করেছেন।