কক্সবাজারের উখিয়ায় বন্যার পানিতে পস্নাবিত নিম্নাঞ্চল -যাযাদি
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন স্থানে খালের পাশের সড়ক ভেঙে বিলীন হয়ে যাওয়ায় ওইসব স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। ভোগান্তিতে কয়েক হাজার মানুষ। এদিকে গাইবান্ধার সাঘাটার চরাঞ্চলের ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানিতে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে। বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের সহস্রাধিক পরিবার। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। একদিকে বসতঘরে পানি, অন্যদিকে কাজ না পাওয়ায় চরম বেকাদায় রয়েছেন তারা। এছাড়া ছয় দিনের টানা বৃষ্টিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কের মিরসরাইয়ের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ভেঙেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ সড়ক এবং পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত।
দীর্ঘদিন ধরে খাল সংস্কার না থাকায় ও অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বলে জানান স্থানীয়রা। এদিকে বুধবার পানিবন্দি ৪৫০ পরিবারের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, টানা ছয় দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, জোরারগঞ্জ, কাটাছড়া, দুর্গাপুর, মিঠানালা, মিরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, ওসমানপুর ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। গ্রামীণ সড়কেরও বেহাল দশা। পানিবন্দি হয়ে আছে ফেনাপুনি, ওসমানপুরের মরগাং, চিনকী আস্তানা ও খিলমুরালী গ্রামের সহাস্রাধিক পরিবার। চুলায় পানি ওঠায় রান্নাও বন্ধ। খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ফেনাফুনী গ্রামে পানিবন্দি রয়েছে অনেক পরিবার। কোমর পানি হওয়ায় মানুষের চলাচলে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের জানান, ফেনাফুনী খালটি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সংস্কার না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। টানা বৃষ্টি হলে তো ভোগান্তির শেষ থাকে না। কোমর পরিমাণ পানির কারণে চলাচলে অনেক কষ্ট হচ্ছে। অনেকের রান্নাঘরের চুলায় পানি উঠায় রান্নাবান্না হয়নি।
আরেক বাসিন্দা শিহাব শিবলু জানান, পাহাড়ি তিন ছড়ার পানি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পার হয়ে এক ছড়া দিয়ে যায়। কিন্তু ছড়ার মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ করে দখলের কারণে পানি যাওয়ার পথ বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতি বছর বৃষ্টি হলে আমাদের গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত থাকে। অচিরেই খালের ওপর নির্মিত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খাল সংস্কার করার জোর দাবি জানান তিনি।
জানা গেছে, খাল পার্শ্ববর্তী হাট-বাজারগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শতশত অবৈধ দোকান-পাট ও স্থাপনা। এগুলোর কারণে বিভিন্ন খালের পানি প্রবাহে বিঘ্ন ঘটে। ফলে প্রতি বছর নিম্নাঞ্চল এলাকা পানির নিচে ডুবে যায়। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে পানি নিষ্কাশনের পথ না রেখে বিভিন্ন শিল্প-কারখানা গড়ে তোলায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনু বলেন, তার ইউনিয়নের ফেনাফুনী ও সৈদালী গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। মূলতমায়ানী ও মঘাদিয়া ইউনিয়নের লোকজন খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কারণে তার ইউনিয়নের লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও'র সঙ্গে আলোচনা করবেন।
মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, টানাবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রোপা আমন ও সবজির কিছুু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ জানান, মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় মৎস্য প্রকল্পগুলোর পাড় নিচু হওয়ায় দুই দিন বৃষ্টি হলেই পানি বাইরে চলে যায়। টানা ছয় দিন বৃষ্টি হওয়ায় মৎস্য চাষিদের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চাষি তাকে ক্ষতির বিষয়ে জানাননি।
ইউএনও মাহফুজা জেরিন বলেন, গত ছয় দিন টানা বৃষ্টিতে মিরসরাইয়ের অনেক এলাকায় পানি ওঠে গেছে। বুধবার উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নে ২৫০ পরিবার ও ইছাখালী ইউনিয়নের ২০০ পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে।
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের ডলু খালে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সরদানী পাড়ায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যেকোনো মুহূর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে প্রায় ২ শতাধিক বসতঘর। পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত যাপন করছেন বসতঘরের লোকজন।
জানা যায়, আধুনগর সরদানী পাড়ায় ডলু খালের পাড় ঘেঁষা গারাঙ্গিয়া রশিদিয়া সড়কে এই ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। আধুনগর বাজার হতে মছদিয়া হয়ে গারাঙ্গিয়ার আলুরঘাট পর্যন্ত এই সড়ক বিস্তৃত। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সওদাগর পাড়া, সিপাহী পাড়া ও মছদিয়া বড়ুয়া পাড়ার প্রায় ৫-৬ হাজার লোকজন যাতায়াত করেন। এছাড়াও মছদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী সামশুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আধুনগর উচ্চ বিদ্যালয়, গারাঙ্গিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও আধুনগর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিার্থীরা যাতায়াত করেন। সম্প্রতি কয়েকদিনের টানা বর্ষণে সড়কের ওই স্থানে ভাঙন সৃষ্টি হওয়ায় বর্তমানে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজিমন দেখা যায়, আধুনগর ইউনিয়নে ডলু খাল ঘেঁষা গারাঙ্গিয়া রশিদিয়া সড়কের একাধিক অংশে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড বস্নক দিয়ে খালের ভাঙন সংস্কার করেছে। সম্প্রতি বৃষ্টির ফলে খালের পানি বেড়ে যাওয়ায় সরদানী পাড়া এলাকায় ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ভাঙনের ফলে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টিতে খালের পানি বেড়ে গেলে ভাঙা স্থান দিয়ে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়বে। এতে তিগ্রস্ত হবে সরদানী পাড়াসহ আশপাশের এলাকার লোকজন।
আধুনগর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন জানান, সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে খালে পানি বেড়ে যাওয়ায় ডলু খালে গারাঙ্গিয়া রশিদিয়া সড়কের সরদানী পাড়ায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল এলে ভাঙা অংশ দিয়ে ডলুর পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়বে। ভাঙন দ্রম্নত সংস্কারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ধীমান কৃষ্ণ চৌধুরী বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের একটি টিম ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছে এবং জরুরিভিত্তিতে ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে কাজ শুরু করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের উখিয়ায় ৪ দিন একটানা প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে অন্তত ৩০টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৪ হাজার মানুষ। বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, গ্রামীণ সড়ক লন্ড ভন্ড ও কালভার্ট বিধ্বস্ত, গাছপালা এবং পানের বরজ নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, জালিয়া পালং ইউনিয়নের নম্বরী পাড়া, ঘাটঘর পাড়া পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি, রাজা পালং ইউনিয়নের কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, হিজলিয়া, পিনজির কুল, রত্না পালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা, পশ্চিম রত্না, বড়ুয়াপাড়া, খোন্দকার পাডা, গয়াল মারা হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, মনির মার্কেট,পাগলির বিল ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিলসহ অন্তত ৩০ গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত হওয়ায় অনেক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৪ হাজার মানুষ।
জালিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম সৈয়দ আলম জানান, সমুদ্র উপকূলীয় ডেইল পাড়া, নম্বরি পাড়া ও ঘাটঘর পাড়ায় কয়েকশ' পরিবার পানিতে আটকা পড়েছে। সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের উখিয়া সভাপতি নুর মোহাম্মদ শিকদার জানান, ৪ দিন ধরে প্রবল বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে মাটির রাস্তা গুলো লন্ডভন্ড এবং কালভার্ট বিধ্বস্ত হওয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা ও পানের বরজ ভেঙে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানান, রুমখা চৌধুরী পাড়া, বড়বিল মনি মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় পস্নাবিত হয়েছে। সবজি ক্ষেতসহ আমন মৌসুমের বীজতলা পানিতে ভেসে গেছে। স্থানীয় মৎস্য চাষিরা জানান, মৎস্য ঘেরে ও পুকুরে পানি ঢুকে কয়েক লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
ইউএনও তানভীর হোসেন বুধবার নিম্নাঞ্চল পস্নাবিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেন তিনি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল মামুন জানান, ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসরত মানুষগুলোকে নিরাপদ স্থানে চলে আসার জন্য মাইকিংসহ আশ্রয় কেন্দ্রগুলো খোলা রাখা হয়েছে।
মানিকছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি জানান, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার গচ্ছাবিল বাজার থেকে পূর্বপাড়া চাইলস্নাতলী ব্রিজ পর্যন্ত ১ কিলোমিটার ইট সলিং সড়কের বেশ কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে খালে। এতে উপজেলা সদরসহ স্থানীয় বাজারে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পূর্ব গচ্ছাবিল এলাকার কয়েকটি গ্রামের আড়াইশ' মানুষ।
জানা গেছে, উপজেলা সদর ইউনিয়নের পূর্ব গচ্ছাবিল এলাকার ৩৫-৪০টি পরিবারের প্রায় আড়াইশ' মানুষের উপজেলা সদর ও স্থানীয় গচ্ছাবিল বাজারে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক গচ্ছাবিল বাজার-পূর্বপাড়া চাইলস্নাতলী ব্রিজ। এছাড়াও শিার্থীদের যাতায়াত, মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে যাতায়াত ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য নিয়ে স্থানীয় হাট ও উপজেলা সদরে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি।
সরেজমিন দেখা যায়, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে সড়কের বিশাল অংশ ভেঙে পড়েছে খালে। সেইসঙ্গে সড়কের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে ফাটল ধরেছে আরও বেশ কিছু অংশে। এমন অবস্থায় বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছেন গ্রামবাসী।
পূর্ব গচ্ছাবিল গ্রামের বাসিন্দা মহারাজ হাওলাদার বলেন, 'আগে কিছুটা চলাচল করা যেত, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পুরোটাই ভেঙে যায় সড়কটি। বয়োবৃদ্ধ, ছোট ছোট স্কুল শিার্থী ও রোগী নিয়ে যেতে বেশি সমস্যা হচ্ছে। আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ছে।'
একই এলাকার বাসিন্দা মো. মনিরুজ্জামান ও মামুন বলেন, 'আমরা এই গ্রামের প্রায় আড়াইশ' মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করি। খালের পাড় ঘেঁষা হওয়ায় সড়কটি ভেঙে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। দ্রম্নত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে সড়কের পাশাপাশি ঘরবাড়ি ও ফসলি জমিও ভেঙে খালে চলে যাবে।'
স্থানীয় শমসের আলী বলেন, 'গচ্ছাবিল বাজার পর্যন্ত ইট সলিং সড়কের বাকি অংশও ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রম্নত উদ্যোগ না নিলে মানুষের ঘরবাড়িও তিগ্রস্ত হবে।'
মানিকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ফারুক বলেন, সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ। তবে ইউনিয়ন পরিষদের ছোটখাটো বরাদ্দ দিয়ে ভাঙনরোধ করা যাবে না। এজন্য জেলা পরিষদ কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরাদ্দ প্রয়োজন।
সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি জানান, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বন্যাকবলিত চরাঞ্চলের রাস্তা ঘাটে বন্যার পানি ঢোকার কারণে আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম ব্যবহৃত হয়েছে।
জানা গেছে উপজেলার চরাঞ্চলের আটটি স্কুলের শ্রেণি কক্ষসহ আশপাশের এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ওই সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ায় ব্যাঘাত হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস ইতিমধ্যে ওসব স্কুল সাময়িক বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
গুয়াবাড়ী স. প্রা. বিদ্যালয়, দীঘলকান্দি স. প্রা. বিদ্যালয়, পাতিলবাড়ী স. প্রা. বিদ্যালয়সহ তিনটি বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি উঠেছে। এছাড়াও বাকি বিদ্যালয়গুলোর চারদিকে ও সংযোগ রাস্তায় পানি উঠেছে।