বাগেরহাটে দম্পতি ও পাইকগাছায় প্রেমিক যুগলের আত্মহত্যা

দৌলতপুরে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা তিন জেলায় ৩ অপমৃতু্য

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
বাগেরহাটে স্বামী-স্ত্রী এবং খুলনার পাইকগাছায় প্রেমিক-প্রেমিকা আত্মহত্যা করেছে। এদিকে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া কক্সবাজারের উখিয়ায় বানের পানিতে ডুবে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃতু্য, পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ব্রিজের নিচ থেকে ট্রাক্টর ব্যবসায়ীর লাশ ও শরীয়তপুরের নেছারাবাদে সমিতির মালিকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা বৈটপুর এলাকায় এক দম্পতি বসতঘরে পৃথকভাবে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তারা হলেন- বৈটপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ শেখের ছেলে দাউদ শেখ (৫২) এবং তার স্ত্রী লাকি বেগম (৪৩)। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ লাশ সুরতহাল করেছে। ময়না তদন্ত হবে কি না এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত দ্বিধাদ্বন্দ্ব চলছিল বলে জানা যায়। মৃত দম্পতির ছেলে ও মেয়ে জানায়, দাউদ ও লাকির মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে দাম্পত্য কলহ চলছিল। কলহ মিটিয়ে বুধবার রাতে তারা এক ঘরে অবস্থান করেন। বৃস্পতিবার সকালে তাদের ছেলে-মেয়ে বাবা-মাকে বসতঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত দেখে। পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি জানান, খুলনার পাইকগাছায় গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এইচএসসি পরীক্ষার্থী প্রেমিক-প্রেমিকা। বুধবার রাতে উপজেলার গড়ইখালীতে ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন- গড়ইখালী শহীদ আয়ুব-মুছা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী প্রিয়াংকা মন্ডল (২১) ও ব্রজ মন্ডল (২২)। ব্রজ কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর গ্রামের অমিত মন্ডলের ছেলে। তিনি হোগলারচক গ্রামে মামা জিতেন্দ্র নাথ মন্ডলের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতেন। প্রিয়াংকা পাইকগাছার বাইন বাড়িয়া গ্রামের পরিতোষ মন্ডলের মেয়ে। স্থানীয় মধু মন্ডলসহ অনেকেই জানান, প্রিয়াংকার বাবা পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থায় তার বিয়ে ঠিক করেন। বিয়েতে সম্মতি না দেওয়ায় মেয়েকে পরিবার থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয়। প্রিয়াংকা ঘটনাটি প্রেমিক ব্রজের কাছে জানান। উপায়ান্তর না পেয়ে দুইজনই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পাইকগাছা থানার ওসি ওবাইদুর রহমান জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। থানায় অপমৃতু্য মামলা ও লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি জানান, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আরিফুল ইসলাম ওরফে বুশ (৩০) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি পূর্বপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আরিফুল ওই এলাকার গোলাম মোস্তফার ছেলে। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, গত মঙ্গলবার রাতে মহিষকুন্ডি পূর্বপাড়া এলাকার গোলাম ড্রাইভারের বাড়ি থেকে একটি বাইসাইকেল চুরি হয়। পরে চোর সন্দেহে বুশকে আটকিয়ে বুধবার রাতে মারধর করে গোলামের পরিবারসহ এলাকাবাসী। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘটনাস্থলেই তার মৃতু্য হয়। দৌলতপুর থানার ওসি মাহাবুবুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, কক্সবাজারের উখিয়ার হলদিয়া পালংয়েলংয়ে মো. রাকিব নামের ৭ বছরের এক শিশুর বানের পানিতে ভেসে গিয়ে মর্মান্তিক মৃতু্য হয়েছে। গত বুধবার দুপুরে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের পূর্ব মরিচ্যা হালুকিয়া পাড়ায় এ ঘটনাটি ঘটে। রাকিব ওই গ্রামের আলী আকবরের ছেলে। হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানান, গত চার দিন ধরে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পুরো এলাকায় বন্যার পানিতে পস্নাবিত হয়েছে। বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশেই খেলতে গিয়ে অসাবধানতাবশত শিশু ছেলে পানিতে ভেসে গিয়ে তার মৃতু্য হয়। উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসেন জানান, আবেদনের প্রেক্ষিতে শিশুর মরদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। আটোয়ারী (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি জানান, পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ব্রিজের নিচ থেকে এক ট্রাক্টর ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ওই ব্যবসায়ীর নাম শাকিল রানা (২৮)। তিনি আটোয়ারীর প্যারিস সিনেমা এলাকার আজিজুল হকের ছেলে। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা বুধবার রাতে উপজেলার পলস্নী বিদু্যৎ এলাকার সুখের ব্রিজের নিচ থেকে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা মডেল স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। আটোয়ারী থানার ওসি (তদন্ত) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার জানান, লাশ প্রাথমিক সুরতহাল করার পর ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। শাকিলের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। পুলিশের পক্ষে একটি অপমৃতু্যর মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি জানান, পিরোজপুরের নেছারাবাদে দেনা পাওনার চাপে বিধান চন্দ্র মিস্ত্রী (৪৫) নামে সোনালী সঞ্চয় ও ঋণদান সমিতির মালিকের আত্মহত্যার পর তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের একটি আম গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় তার লাশ পাওয়া পায়। বিধান মিস্ত্রী মাদ্রা গ্রামের সতিন্দ্র মিস্ত্রীর ছেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পিরোজপুর মর্গে পাঠিয়েছে। মাদ্রা গ্রামের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সদানন্দ মন্ডল জানান, বিধান মিস্ত্রী আরামকাঠি সঞ্চয় সমিতিতে মাঠ কর্মী হিসেবে কাজ করা অবস্থায় নিজে একটি সমিতি পরিচালনা করতেন। তাছাড়াও একাধিক সদস্যদের সঙ্গে তার দেনাপাওনা ছিল। তার কর্মস্থলের মালিক আরামকাঠি সমিতির রহমত মিয়ার সঙ্গে লেনদেন নিয়ে বিরোধ দেখা দেয় এবং বিধানকে কিছু দিন আগে আটকে রেখে অপদস্ত করায় তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এলাকাবাসী জানান, বিধানের নিজের সমিতিতে সদস্যদের জমা করা সঞ্চয়ের পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার চাপে হয়তো আত্মহত্যা করতে পারেন। নেছারাবাদ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এম শাহিন বলেন, ইউডি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।