টাঙ্গাইল শহরে ওএমএস (অর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) কেন্দ্রগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ক্রেতারা ওএমএস'র পণ্য চাল-আটা গ্রহণ করছেন। কেউ কেউ পণ্য না পেয়ে খালি ব্যাগ নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন- এমন অভিযোগও রয়েছে ক্রেতাদের। এসব কেন্দ্রে নারী ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম- তাই বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি স্থানীয়দের।
খাদ্য অধিদপ্তর পরিচালিত টাঙ্গাইল শহর ও শহরতলীতে ১৬টি ওএমএস কেন্দ্র রয়েছে। শহরের দিঘুলীয়া, কালিপুর, পার্ক বাজার, সন্তোষ, আকুর-টাকুর, বৈল্যা বাজারের ওএমএস'র কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ১২০ টাকায় পাঁচ কেজি আটা ও ১৫০ টাকায় পাঁচ কেজি চাল পাওয়ার অপেক্ষায় ভোর থেকে হাতে ব্যাগ নিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক নারী-পুরুষ। এর মধ্যে নারীদের সংখ্যাই বেশি। বাজারে আটা-চালের দাম বেশি থাকায় নিম্ন-নিম্নমধ্যবিত্ত নারী-পুরুষরা ওএমএস কেন্দ্র থেকে আটা ও চাল কিনতে এসেছেন।
সখিনা নামের এক নারী জানান, তার স্বামী ভ্যানচালক। পরিবারে চারজন সদস্য রয়েছে। ভ্যান চালিয়ে প্রতিদিন যে টাকা রোজগার করেন, তা দিয়ে সংসার চালানো কষ্টকর। তাই এখান থেকে তিনি প্রায়ই আটা-চাল কিনতে আসেন। অনেক সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও পণ্য না পেয়ে ফিরে যেতে হয়।
সন্তোষ এলাকার আরজিনা নামের এক নারী ক্রেতা জানান, এই কেন্দ্রে পরপর দুই দিন গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও তিনি আটা নিতে পারেননি। পরে তিনি পার্ক বাজার ওএমএস কেন্দ্রে আটা নিতে এসেছেন। দিঘুলীয়া ওএমএস কেন্দ্রের ডিলার (পরিবেশক) খন্দকার রুবেল জানান, তাদের কেন্দ্রে বরাদ্দকৃত চাল-আটা যথানিয়মে ক্রেতাদের দেওয়া হচ্ছে। তবে এই কেন্দ্রে পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। পার্ক বাজারের ওএমএস ডিলার (পরিবেশক) জোয়াহের আলী জানান, প্রতিদিন একজন ডিলারের জন্য এক টন চাল ও এক টন আটা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিজনকে ১২০ টাকায় পাঁচ কেজি আটা ও ১৫০ টাকায় পাঁচ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে পণ্য নিতে ক্রেতারা দাঁড়িয়ে থাকেন। তবে আটার চাহিদা বেশি।
এই কেন্দ্রে কর্তব্যরত খাদ্য বিভাগের উপ-খাদ্য পরিদর্শক আহমাদুর রহমান জানান, যে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, এটি নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে। প্রতিজনকে পাঁচ কেজি আটা ও পাঁচ কেজি চাল দেওয়া হচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ মো. মুছা জানান, শহরে ১৬টি ওএমএস কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিদিন একজন ডিলারের জন্য এক মেট্রিক টন চাল ও এক মেট্রিক টন আটা রয়েছে। চাল ও আটা সঠিকভাবে ক্রেতাদের মধ্যে সঠিকভাবে বিক্রি তদারকির জন্য প্রতি কেন্দ্রে দুইজন করে উপ-খাদ্য পরিদর্শক রয়েছেন। কোথাও কোনো অনিয়ম ঘটলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।