নওগাঁর গ্রামের মহিলারা কেঁচো সারে স্বাবলম্বী

প্রকাশ | ১৬ মে ২০১৯, ০০:০০

রুহুল আমিন, নওগাঁ প্রতিনিধি
নওগাঁর রানীনগর উপজেলা কাশিমপুর ইউনিয়নের একটি আদর্শ গ্রাম কুজাইল। বর্তমানে এই গ্রাম কম্পোস্ট সারের গ্রাম নামে পরিচিত। সংসারের কাজের পাশাপাশি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে আজ নিজেরাই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী কুজাইল গ্রামের মহিলা সিআইজি (সবজি) সমবায় সমিতির মহিলারা। স্বামীর পাশাপাশি কেঁচো দিয়ে কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও বাজারজাত করে সংসারে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করছেন এই সমিতির মহিলারা। প্রতি মাসে কম্পোষ্ট সার উৎপাদন কারখানা থেকে প্রায় ২ হাজার কেজির বেশি উন্নত মানের কেঁচো কম্পোস্ট সার উৎপাদিত হচ্ছে। খরচ বাদে মাসিক আয় প্রায় ১৫ হাজার টাকা। উৎপাদিত কম্পোস্ট সার চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। উন্নত মানের এই কম্পোস্ট সার নিজেদের সবজি ক্ষেতে ব্যবহার করাসহ গ্রামের অন্যান্য কৃষকরা এই সমিতির কাছ থেকে কম্পোস্ট জৈব সার কিনে তাদের ক্ষেতে ব্যবহার করছেন। এতে করে এই এলাকায় দিন দিন ফসলের ক্ষেতে রাসায়নিক সার ব্যবহারের প্রবণতা কমছে আর পরিবেশবান্ধব কেঁচো সার ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমিতির দলনেত্রী সানজিদা আক্তার বলেন, 'আমি গ্রামের কয়েকজন মহিলাদের নিয়ে দলীয়ভাবে আমাদের পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ করতাম। সবজি ক্ষেত থেকে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করার উপায় জানতে কৃষি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তখন কৃষি অফিস ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন এবং মাটির উত্তম স্বাস্থ্য ব্যবস্থা্পনা নামের এক প্রযুক্তির আওতায় কেঁচো লালন-পালন, গোবর সংগ্রহ, হাউস বা চাড়িতে দেয়া, কম্পোস্ট সার তৈরির পর সেগুলো সংগ্রহ করা, সার প্যাকেজিং এবং বাজারজাতকরণসহ নানা বিষয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে। বর্তমানে আমাদের কারখানায় ১০টি বড় হাউস রয়েছে। এ ছাড়াও শতাধিক মাটির চাড়িতে এই কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছি আমরা। আমাদের দেখাদেখি গ্রামের অধিকাংশ মহিলা এই কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছে। বর্তমানে আমাদের এই গ্রাম কম্পোস্ট সারের গ্রাম নামে পরিচিত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, কৃষি অফিস মহিলাদের এই ধরনের উদ্যোগে যাবতীয় উপকরণ, প্রশিক্ষণ ও কেঁচো দিয়ে পরিবেশবান্ধব কম্পোস্ট সার উৎপাদনে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে। তাদের পাশাপাশি ওই গ্রামের অনেকেই এই সার উৎপাদন করতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।