বোরোতে দিশেহারা মতলবের কৃষক

প্রকাশ | ১৭ মে ২০১৯, ০০:০০

কামাল হোসেন খান, মতলব (চাঁদপুর)
চাঁদপুরের মতলবে বোরো ধান মাড়াই কাজে ব্যস্ত কৃষক কৃষাণী -যাযাদি
বোরো মৌসুমের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ধানের ভালো ফলন হলেও ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। উৎপাদন খরচের চেয়েও কৃষকরা দেড় থেকে ২০০ টাকা কমে প্রতি মণ ধান বিক্রি করছে।মতলবের কৃষকরা আমন মৌসুমে কৃষকরা ধানের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হয়েছিল। অনেকে ধানের ন্যায্য দাম না পেয়ে গোলায় রেখে দিয়েছিলেন। তারা ভেবেছিল বোরো উঠার আগে আগে হয়তোবা ধানের দাম বৃদ্ধি পাবে। তখন ধান বিক্রি করবেন। কিন্তু তাদের ধারণা উল্টো হয়েছে। মৌসুমের চেয়েও কম দামে ধান বিক্রি হওয়ায় তাদের গোলার ধান গোলাতেই রয়ে গেছে। এর পরে মড়ার ওপর খাড়ার ঘয়ের মত চলতি মৌসুমে বোরো ধানের দাম নেই। অন্যদিকে এক মন ধান দিয়েও একজন মজুর পাওয়া যাচ্ছেনা। সামনে বড় উৎসব ঈদ। মূল্য কম থাকায় ঈদকে ঘিরেও কৃষকদের দীর্ঘশ্বাস দিন দিন ভারি হচ্ছে। বোরো ধান উৎপাদনে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার কৃষকদেরকে মোটা অংকের অর্থনৈতিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। আর এ লোকসানের মূল কারণ মজুর সংকট, মজুরের শ্রম, সার, কীটনাশক ও সেচের মূল্যবৃদ্ধি। অথচ জমিতে ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচের চেয়ে প্রাপ্ত ধানের বাজার মূল্য অনেক কম। সার্বিক এ পরিস্থিতির কারণে ধান উৎপাদনের লোকসানের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া কৃষকের পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। কৃষকরা বলছেন, প্রতিমণ ধান ৬০০ টাকায় বিক্রি করলেও তাদের উৎপাদন খরচ উঠবে না। ধানের আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় কৃষকেরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। অন্য দিকে দেখা যায় চাষিরা পাকা বোরো ধান কর্তন করে শ্রমিক খরচই তুলতে পারছে না, ধান বিক্রি করে বারতি আয়তো দূরের কথা প্রতি কেজি ধান বিক্রি করে ক্ষতি গুনছেন ৫ টাকার ওপরে। এ কারণে চাষিরা বোরো চাষেও প্রণোদনা দেয়ার দাবি করেছেন। উপজেলার তালতলী গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান হারুন বলেন, বর্তমান দামে ধান বিক্রি করে তাঁর বিঘাপ্রতি লোকসান হচ্ছে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। 'এ অবস্থা চলতে থাকলে আমরা মারা পড়ব' বলেন তিনি। উপজেলার ঘনিয়ারপাড় গ্রামের আবুল বাশার খান বলেন, আমরা ক্ষুদ্র চাষি। ধানের যে দাম তাতে পরিবার নিয়ে আমাদের বেঁচে থাকাই এখন দায় হয়েছে। এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সালঅউদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, সারাদেশের মতো মতলব উত্তর উপজেলাতেও একই অবস্থা। উপজেলায় এখ নপর্যন্ত আবাদকৃত জমির অর্ধেক বোর ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। এখনও বাকী রয়েছে অর্ধেক। প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও ভায় কাজ করছে কৃষকদের মাঝে। বর্তমানে বাজারে বোরো ধানের যে দাম পাচ্ছে কৃষক তাদের আর্তনাত শুনে নেজেই আবেগ-আপস্নুত হয়ে যাই।