জুটমিলের ৭ হাজার শ্রমিকের মানবেতর জীবনযাপন

প্রকাশ | ১৯ মে ২০১৯, ০০:০০

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুন্ড
সীতাকুন্ডের বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন প্‌াচ জুটমিলের হভশ হাজার শ্রমিক মানবেতর জীবনযাপন করেছে। টানা দেড় থেকে তিন মাস পর্যন্ত জুটমিল শ্রমিকদের বেতন ও মজুরি পরিশোধ না করায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে দিনানিপাত করছেন। ইতোমধ্যে শ্রমিকদের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটি টাকা। পাওনা আদায়ে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া পাওনা আদায়ের দাবিতে ইতোমধ্যে কয়েক দফা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না। মিল সিবিএ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ জুটমিল করপোরেশন (বিজেএমসির) নিয়ন্ত্রণাধীন পাঁচটি জুটমিল রয়েছে। হাফিজ জুলমিলের তিন হাজার শ্রমিকের পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা, গুল আহমদ জুটমিলের ১৭০০ শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বকেয়া পড়েছে তিন কোটি ৬৬ লাখ টাকা, এমএম জুটমিলের ৩০০ শ্রমিক-কর্মচারীর পাঁচ সপ্তাহের মজুরি বকেয়া ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, গালফ্রা হাবিব লি.-এর ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আর আর টেক্সটাইলের সহস্রাধিক শ্রমিকের পিএফ-গ্র্যাচুইটি বকেয়া পড়েছে। এসব কারখানার শ্রমিক ও সিবিএ নেতারা জানান, পাটকলগুলোতে হাজার হাজার শ্রমিক দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকানির্বাহ করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে মিলগুলো তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন ও মজুরি দিচ্ছে না। এভাবে প্রতিটি মিলেই শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকায় শ্রমিকরা চরম দুর্দিন পার করছেন। বার আউলিয়া হাফিজ জুটমিলস লিমিটেডের সিবিএ সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম জানান, বর্তমানে হাফিজ জুটমিলের সাড়ে তিন হাজার স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছয় সপ্তাহের বেতন বকেয়া পড়েছে পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ ছাড়া ৬-৭ বছর কোনো শ্রমিক পিএফ-গ্র্যাচুইটিও পাচ্ছেন না। বাস্তবায়ন হচ্ছে না মজুরি কমিশনও। ইতোমধ্যে শ্রমিকদের আট সপ্তাহের বকেয়া বেতন জমে গেছে। কর্মকর্তাদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এখানে নিধারুণ কষ্টে দিন কাটছে শ্রমিকদের। হাফিজ জুটমিলসকে ঘিরে কোলোনি প্রায় ১৩৭টি বিভিন্ন দোকান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে মিলে বেতন না দেয়াতে দোকানগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গুল আহমদ জুটমিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের জানান, 'আমাদের পাঁচ মাসের মজুরি, কর্মকর্তাদের বেতন, অনেক শ্রমিকের পিএফ কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। বহু দেন-দরবার করেও টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে বিভিন্ন মিল আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। '