সবুজ হলো না হবিগঞ্জের গ্রিন ড্রাইভ

প্রকাশ | ২০ মে ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি হবিগঞ্জের পর্যটন বিকাশে গ্রিন ড্রাইভ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তদারকি আর যত্নের অভাবে গ্রি ড্রাইভ সবুজ হয়নি। বরং সেখানে লাগানো গাছগুলোর অধিকাংশই মরে গেছে। 'পাহাড় টিলা হাওর বন, হবিগঞ্জের পর্যটন' এই স্স্নোগানটি হলো হবিগঞ্জ জেলার ব্র্যান্ডিং। পাহাড়, নদী, হাওর আর সমতলের অপূর্ব মেলবন্ধনের জন্য হবিগঞ্জের ব্রান্ডিং হিসেবে পর্যটনকে বেছে নেয়া হলেও পরিকল্পনা এবং অবকাঠামো গড়ে না ওঠায় এই শিল্প এখনো বিকশিত হয়নি। তাই জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রিন ড্রাইভ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয় গত বছর। কক্সবাজারে হাজার কোটি টাকা খরচ করে তৈরি করা হয়েছে মেরিন ড্রাইভ। এটি পর্যটন বিকাশে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। এরই আলোকে হবিগঞ্জে গ্রিন ড্রাইভ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে এটি সরকারি বড় কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নয়। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সৌন্দর্যকে কাজে লাগিয়ে জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ স্থানীয় উদ্যোগেই ড্রাইভটি নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। সাবেক ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ থেকে জগদীশপুর পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার সড়ককে গ্রিন ড্রাইভ নামকরণ করা হয়। এই সড়কটি এমনিতেই নয়নাভিরাম। এর উভয় পাশে চা-গাছ আর বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ। পর্যটকদের আকর্ষণ করতে এই ড্রাইভে লাগানো হয় ১২ প্রজাতির দেশী-বিদেশী সাড়ে ৬ হাজার ফুলের গাছ। এর মাঝে রয়েছে জারুল, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, সোনালু, কাঞ্চন, পলাশ, শিমুল, কদম, নিম এবং বিদেশী ফুল গ্রেসিয়াসহ আরও দু'টি প্রজাতির ফুল। এই ফুল গাছ লাগানোর উদ্দেশ্য হলো বার মাস সেখানে ফুল থাকবে এবং এর সৌন্দর্য্যে সবাই বিমোহিত হবে। ৫ বছরের মধ্যে এটি পরিপূর্ণ বিকশিত হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এক বছরের মধ্যেই অধিকাংশ গাছই মরে গেছে। কোথাও তা ভেঙে পড়ে গেছে। আবার কোথাও লোকজন ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করেছে অনেক গাছ। সরেজমিন দেখা যায়, গ্রিন ড্রাইভের আশপাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি চা-বাগান। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, রেমা-কালেঙ্গা রিজার্ভ ফরেস্ট, তেলিয়াপাড়া স্মৃতিসৌধসহ জেলার পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্পটগুলোতে যাতায়াতের মাধ্যম হবে এই গ্রিন ড্রাইভ। ফলে পর্যটকরা এখানে আসার জন্য উদগ্রীব থাকবেন। গ্রিন ড্রাইভটি এতই বৈচিত্র্যপূর্ণ এবং আঁকাবাঁকা যে এটি গাড়ি দিয়ে অতিক্রমের সময় মনে হবে রাস্তা দিয়ে নয় যেন ফর্মুলা ওয়ানের ট্র্যাক দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে। রাস্তার পাশেই চোখে পড়বে বানরসহ বিভিন্ন ধরনের পশু পাখি। কিন্তু গ্রিন ড্রাইভের বিভিন্ন স্থানে লাগানো গাছগুলো মরে গেছে। কোথাও গাছের প্রতিরক্ষা খাঁচা ভেঙে গেছে। চাঁনপুর চা-বাগান এলাকায় অধিকাংশ গাছই আর জীবিত নেই। স্থানীয় লোকজন জানান, বন বিভাগ গাছ লাগানোর কাজ করলেও এটি দেখভাল না করায় এই সমস্যা হয়েছে। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলুল জাহিদ পাভেল জানান, পর্যটনকে হবিগঞ্জ জেলার ব্র্যান্ডিং হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। এর কারণ হলো এখানে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য এবং সৌন্দর্য্য রয়েছে। পর্যটন বিকাশে জেলা প্রশাশনের পক্ষ থেকে মাধবপুর উপজেলার জগদীশপুর থেকে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ পর্যন্ত নয়নাভিরাম সুন্দর সড়কটিতে গ্রিন ড্রাইভ নামকরণ করে এতে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, জারুলসহ বিভিন্ন ফুলের গাছ লাগানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা জানতে পেরেছি অনেক গাছই নষ্ট হয়ে গেছে। এখানে নতুন করে আবারও গাছ লাগানো হবে। হবিগঞ্জর সহকারী বন সংরক্ষক আব্দুলস্নাহ আল মামুন জানান, ৫০ শতাংশ গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। জুন মাসে আবারও গাছ লাগানো হবে। ইতোমধ্যে চারা উৎপাদন করা হয়েছে।