মৌলভীবাজার ও বাঁশখালীতে সুলভ মূল্যে সবজি বিক্রি

গাংনীতে সবজিতে স্বস্তি, বেড়েছে মাছের দাম

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
মেহেরপুরের গাংনীতে সবজিতে স্বস্তি ফিরেছে। তবে বেড়েছে মাছের দাম। অন্যদিকে, মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সুলভ মূল্যে সবজি বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট- গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরের গাংনীতে কিছুদিন আগেও সবজির দাম ছিল আকাশচুম্বী। সব ধরনের সবজি ছিল ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। তবে এখন সবজির দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা। অন্যদিকে বেড়েছে মাছের দাম। সবজির দাম কমায় ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্য মতো সবজি কিনতে পেরে খুশি। প্রশাসন বলছে, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে বাজারদর স্থিতিশীল রাখতে। গত সোমবার বামন্দী বাজার ও আজ মঙ্গলবার গাংনী হাট ও আড়তে পাওয়া গেছে দাম কমার হিসাব। কাঁচামরিচ, আদা, রসুন, আলু ও শাক-সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কমেছে দাম। পাইকারি বাজারের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে শাকসবজি বিক্রি করছেন তারা। বাজারে আলুর কেজি ৫৩ থেকে ৫৫ টাকা। যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। পেঁয়াজ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকায়। প্রতি কেজি বেগুনের দাম ছিল ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, লাউ প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কলা ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা কেজি ও গাজর প্রতি কেজি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুলা ৩০ টাকা কেজি, পালং শাক ৬০ টাকা, ফুলকপি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, লাল শাক ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, টমেটো ২শ' টাকা এবং লেবু হালিতে ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। চলতি সপ্তাহে নতুন করে পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪৮ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২শ' টাকা থেকে ২২০ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম রাখা হচ্ছে প্রতি কেজি ৩শ' টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০০ টাকা কেজি দরে। সপ্তাহন্তে মুরগির দাম কমেছে ২০-৩০ টাকা। মাছের বাজার একটু চড়া। দেখা গেছে, গলদা চিংড়ি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের পাঙ্গাস মাছের দাম প্রতি কেজি ১৫০ টাকা। রুই মাছ ছোট সাইজের বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, গস্নাস কার্প মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২১০ টাকা কেজি দরে। কাতলা মাছ ২৮০ টাকা কেজি। তাছাড়া দেশি মাছের দাম নাগালের বাইরে। সবজি ক্রেতা বামন্দীর সুমন ও বাবু জানান, বেশ কিছুদিন পর বাজার করতে এসে অনেকটা স্বস্তি পেয়েছেন। সবধরনের সবজির দাম কমেছে। তবে আলু ও পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলে ক্রেতাদের মধ্যে আরও স্বস্তি ফিরে আসত। একই কথা জানালেন সিন্দুর কৌটা গ্রামের আকবর আলী। তিনি জানান, কিছুদিন আগেও এক হাজার টাকা নিয়ে সবজি বাজারে ঢুকলে চাহিদা মতো কেনা সম্ভব হতো না। এখন সব সবজির দাম কিছুটা কমেছে, ইচ্ছে মতো সবজি কিনতে পারছেন সবাই। সবজি ব্যবসায়ী কুঞ্জনগরের ইন্তাজুল জানান, আবহাওয়া অনুকূল তাই বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। সে কারণে দাম কমেছে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) প্রীতম সাহা জানান, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। স্টাফ রিপোর্টার, মৌলভীবাজার জানান, মৌলভীবাজারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা কেনা দামে সবজি বিক্রি করেছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে জেলা শহরের চৌমুহনা এলাকায় তারা কম মূল্যে লাউ জিঙ্গা, শশা, আলুসহ নানা কাচাসামগ্রী বিক্রি করে। ছাত্র আন্দোলন প্রতিনিধি তানজিয়া শিশির বলেন, 'নিত্যপণ্য কাঁচাবাজারের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আমরা চেষ্টা করছি সাধারণ মানুষকে কেনা দামে সবজি খাওয়াতে। আজ ৩৫ হাজার টাকার সবজি কিনেছিলাম। বেলা ১টার আগে সব বিক্রি হয়ে গেছে। আগামীকাল পৌরসভা প্রাঙ্গণে বিক্রি করা হবে।' এসময় উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য জাকারিয়া সৈকত ইমন, ছামায়ুর রহমান, জাবেদ রহমান, এহসানুল হক জাকারিয়া, রুহুল আমীন, শাহ ওসমান জাকি প্রমুখ। সবজির মধ্যে বেগুন কেজি দরে ৫৫ টাকা, পেঁপে ৫০, মুলা ৪০, লেবু হালি ২০, ঝিঙ্গা ৪০, পটল ৪০, লাউ প্রতিটি ৩০, ঢেঁড়স ৪৫, কুমড়া ৩০, মরিচ, ১৩০, শশা ৩০, আলু ৫০, লাল শাক ২৫ টাকা দরে প্রায় ৩শ' ক্রেতার কাছে বিক্রি করা হয়। বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে সূলভ মূল্যে শাক-সবজি এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা কৃষি অফিস কার্যালয় মাঠে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগিতায় সূলভ মূল্যে শাক-সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করা হয়। এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জসিম উদ্দিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেক, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শওকতুজ্জামানসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। এ কার্যক্রম দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা ফিরে না আসা পর্যন্ত চালু থাকবে বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সালেক। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জসিম উদ্দিন বলেন, 'আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি এবং নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি না করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করছি। এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য কমাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শাক-সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এই সুলভ মূল্যের প্রভাব বাজারে ইতোমধ্যে পড়েছে। এতে করে ভোক্তারা উপকৃত হবে।'