পিটিয়ে ও কুপিয়ে কিশোর বৃদ্ধসহ ৪ জনকে হত্যা
প্রকাশ | ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
স্বদেশ ডেস্ক
চার জেলায় বিভিন্ন ঘটনায় পিটিয়ে ও কুপিয়ে কিশোর-বৃদ্ধসহ চারজনকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাজীপুরের টঙ্গী, যশোরের অভয়নগর, বাগেরহাট ও ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে এসব হত্যার ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর-
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, টঙ্গীতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে জাফর উলস্নাহ (৪২) নামে এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় দুই ছিনতাইকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে আটক ছিনতাইকারীদের মধ্যে শাহীন (২২) ও রাকিবকে (২৪) মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত ১২টায় স্টেশন রোড এলকায় ফায়ার সার্ভিস গেট সংলগ্ন এ ঘটনা ঘটে।
সঙ্গে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী নিহত জাফর উলস্নাহ ফেনী জেলার করোচিয়া গ্রামের মৃত করিমুলস্নাহর ছেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় এক ছিনতাইকারী বর্তমানে টঙ্গীর শহীদ আহসান উলস্নাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তবে তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি। অপর ছিনতাইকারী শাহিন মিয়া (২২) পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
জানা যায়, রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন জাফর উলস্নাহ। পথে ছিনতাইকারীরা তার পথরোধ করে গলা ও থুঁতনিতে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে তার সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। স্থানীয়রা জাফর উলস্নাহকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃতু্য হয়।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি কায়সার আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, যশোরের অভয়নগরে কবুতর চোর ধরতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আমিন উদ্দিন মোড়ল (৮০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পায়রা ইউনিয়নের বারান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আমিন উদ্দিন বারান্দি গ্রামের মৃত জামেদ আলী মোড়লের ছেলে।
নিহতের ছোট ছেলে শাহনেওয়াজ মোড়ল বলেন, রাত ১০টায় প্রতিবেশী মোবারেক মোড়লের ছেলে আরিফুল মোড়ল (২৫) তাদের বাড়িতে আসেন। কিছু সময় পর গোপনে কবুতর চুরি করতে গেলে হাতেনাতে ধরা হয় তাকে। এ সময় চোর আরিফুলের চিৎকারে তার চাচা মিজানুর মোড়ল (৪০) ও তার স্ত্রী মৌসুমী বেগম (৩৪), আত্মীয় হাবিবা খাতুন (২০) ও ইশারাত মোড়ল (৫০) দেশীয় অস্ত্র সহকারে তাকে ও তার বাবাকে তাড়া করে। তিনি পালিয়ে গেলেও হামলাকারীরা তার বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে ফেলে রেখে যায়। পরে এলাকাবাসী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অভয়নগর থানার ওসি এমাদুল করিম বলেন, সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।
বাগেরহাট প্রতিনিধি জানান, বাগেরহাট জেলা সদরের কচুয়া উপজেলার সীমান্তের ফতেপুর বাজারে মঙ্গলবার রাতে পলাশ সেখ (৩৮) নামের একজন মামলার আসামিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। নিহত পলাশ সেখ কচুয়া উপজেলার চন্দ্রপাড়া গ্রামের আফজাল সেখের ছেলে।
জানা যায়, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা রিয়াজকে মারপিট মামলার এজাহার নামীয় আসামি পলাশ সেখকে মঙ্গলবার রাতে জনৈক শিমুল সেখ মোবাইল ফোনে ফতেপুর বাজারে ডেকে আনেন। সেখানে পলাশ ও প্রতিপক্ষ আব্দুর রবদের সঙ্গে ব্যাপক বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে প্রতিপরা পলাশকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে।
কচুয়া থানার নবাগত ওসি রাশেদুল আলম জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার সকালে বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনিসংহ) প্রতিনিধি জানান, ময়মনিসংহের ঈশ্বরগঞ্জে জিয়ারুল ইসলাম (১৭) নামের এক কিশোর প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হয়েছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। জিয়ারুল উচাখিলা ইউনিয়নের আলিনগর গ্রামের আলাল উদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, ওই আলগী গ্রামের আব্দুল হক মিয়ার ছেলে রাশিদ (৩৩) ও রাসেল (২৮) মিয়ার সঙ্গে জিয়ারুলের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রাশিদ ও রাসেল মিলে জিয়ারুল ইসলামকে মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার জিয়ারুল কয়েক সহযোগী নিয়ে উচাখিলা বাজারে কলা মহালে রাশিদ ও রাসেলের বাবা আব্দুল হক মিয়ার সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে। ওই ঘটনায় আব্দুল হকের ছেলেরা ফের জিয়ারুলের ওপর হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হয় জিয়ারুল। স্থানীয়রা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়ারুলের মৃতু্য হয়।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি ওবায়দুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ মর্গে আছে।