বেড়েই চলছে ডাকাতি ছিনতাই-মাদক
বেলকুচিতে স্থবির হয়ে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা
প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
বেলকুচি (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
গত ৫ আগস্টের পর থেকে স্থবির হয়ে পড়েছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি থানার পুলিশি কার্যক্রম। যার কারণে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরির ঘটনা। অন্যদিকে মাদকে সয়লাভ পুরো উপজেলা। পুলিশের এমন স্থবিরতা নিয়ে জনমনে চলছে নানা প্রশ্ন। কোন পথে হাটছে পুলিশ কেন চলছে তাদের এমন নীরবতা জনগণের জানমাল নিরাপত্তায় দিতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ। পুলিশকে বেগবান হতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা থাকলেও এর কোনো কার্যক্রম নেই এই থানায়।
এনায়েতপুর গ্রামের মাইক্রোবাসে মালিক নুর ইসলাম বলেন, 'আমি ৮ অক্টোবর রাতে ঢাকা থেকে আসার পথে সয়দাবাদ এনায়েতপুর মহাসড়কের সমেশপুর স'মিলের সামনে কয়েকটি গাছের গুঁড়ি ফেলে গতিরোধ করে ডাকাতদল। এমনটা দেখে পাশের ছোট রাস্তায় গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যাই। পরে থানায় ফোন করি, কিন্তু পুলিশের তেমন একটা সাড়া পাইনি। পরে স্থানীয়রা এসে রাস্তার ওপরের কাঠের গুঁড়ি সরিয়ে দেয়। তারপর আমি পার হয়ে আসি। এর আগে শাহজাদপুর থানার টুটুল ড্রাইভারের একটি গাড়ির গস্নাস ভেঙে দেয় ডাকাতদল।' উপজেলার মাইক্রোচালক রনি বলেন, 'আমি গত ১৩ অক্টোবর রাতে ঢাকা থেকে আসার সময় সমেশপুর স'মিলের সামনে গাছের গুঁড়ি ফেলে ডাকাতি করার চেষ্টা করে। আমি চিৎকার করলে স্থানীয়রা আসে। তখন ডাকাতদল চলে যায়। তরপর পুলিশকে ফোন করি। কিন্তু রাত দেখে পুলিশ আর আসে না।'
বেলকুচির চালা গ্রামের মামুন হাসান বলেন, 'আমাদের বাড়ির সামনে মাদক সম্রাট আলীর বাড়ি। এই বাড়িতে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই মাদক বিক্রি হয়। আগে মাঝে-মধ্যে পুলিশের অভিযান থাকলেও ৫ আগস্টের পর থেকে পুলিশের নেই কোনো তৎপরতা। আমাদের তো মনে হয় থানাতে কোনো পুলিশ নেই। পুলিশ কেন তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিল তা জানা নেই।'
শেরনগর গ্রামের মাদকসেবী আশরাফ আলী বলেন, 'এখন মাদক কিনতে বেশি কষ্ট করতে হয় না। ফোন দিলেই মাদক মিলে যায়।' কারণ জানতে চাইলে বলেন, 'এখন তো আর পুলিশ নেই। সবাই স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পারছে। তাই মাদক ব্যবসায়ীরাও স্বাধীনতা পেয়েছে। আমাদের জন্য ভালোই হয়েছে।'
বানিয়াগাতী গ্রামের সুকুমার বলেন, 'বর্তমানে আমাদের এলাকায় চুরির ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। বাইরে সুতা মেলতেই পারি না। রাত হলেই চোরদের আনাগোনা বেড়ে যায়। থানার পুলিশ তো আর বাইরে আসে না। তাই চোররাই বাইরে রাজত্ব করে চলছে।'
বেলকুচি থানার ওসি জাকারিয়া হোসেন বলেন, 'আমার থানায় দুটি ডাকাতির খবর পেয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে ফোর্স পাঠিয়ে নিয়ন্ত্রণ করি। আর মাদকের ব্যাপারে প্রতিনিয়ত অভিযান চলছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক মামলায় সবাই জামিনে আছে। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।' সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রাফিউর রহমান বলেন, 'ডাকাতির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখন থেকে আমি নিজেই বিষয়টি কঠোরভাবে দেখব।'