ফরিদপুরের সালথায় সোনার ডাঙ্গী গ্রামে রাস্তা না থাকায় এভাবেই ফসলি জমির কাঁদা মাড়িয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী -যাযাদি
ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বলস্নভদী ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রামের নাম সোনার ডাঙ্গী। বলস্নভদি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও পিসনাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আধা কিলোমিটার দূরে গ্রামটি অবস্থিত। প্রায় দুই যুগ আগে গ্রামে বসতি স্থাপন হলেও নেই ঢোকার কোনো রাস্তা। ওই গ্রামে শতাধিক মানুষের বসবাস। মাত্র একশ' মিটার রাস্তা না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রামের ছোট-বড় সবাই। শুধু সোনার ডাঙ্গী নয়, আশপাশের আরও কয়েক গ্রামের মানুষের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে ওই একশ' মিটার রাস্তা। গ্রামের মধ্য দিয়ে পায়ে হাঁটার রাস্তা থাকলেও গ্রাম থেকে বের হওয়ার বা ঢোকার কোনো রাস্তা নেই। তবে ও একশ' মিটার রাস্তা হলেই গ্রামবাসী উপকৃত হবে।
সোনার ডাঙ্গী গ্রামবাসী ও স্থানীয়রা জানান, শতভাগ বিদু্যতায়িত গ্রামে প্রায় অর্ধশত পরিবারে ভোটার সংখ্যা শতাধিক। রয়েছে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী, যারা প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা কৃষি। গ্রামের সবাই মুসলিম ধর্মের অনুসারী।
তারা আরও জানান, শিশুদের স্কুল ও মাদ্রাসায় যেতে অনেক কষ্ট হয়। ১২ মাসই তাদের কষ্ট থাকে। গ্রামের মানুষ অসুস্থ হলে, দ্রম্নত হাসপাতালে নিতে ব্যাঘাত ঘটে। কৃষকের ফসল মাথায় করে নিয়ে যেতে হয় হাটবাজারে। গ্রামের উল্টো পাশে রয়েছে বিশাল ফসলের মাঠ। সেখান থেকে ফসল সংগ্রহ করতে উৎপাদন খরচ ও ঝুঁকি বেড়ে যায়। রাস্তা না থাকায় পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের গাড়িসহ জরুরি সেবার কোনো গাড়িই প্রবেশ করতে পারে না। গাড়ি তো দূরের কথা, বাইসাইকেল বা হাঁটার কোনো ব্যবস্থা নেই। গ্রামবাসী সরকারের কাছে রাস্তাটি করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য দিদার ফকির বলেন, 'রাস্তা না থাকায় সোনার ডাঙ্গী এলাকার বিবাহযোগ্য ছেলেমেয়েদের বিয়ে হচ্ছে না। সামান্য একটু রাস্তার জন্য তাদের সীমাহীন কষ্ট হয়। আমরা বেশ কয়েকবার পদক্ষেপ নিয়েছি। কিন্তু একটু সমস্যা থাকায় পারিনি। এবার জোর দিয়ে চেষ্টা করব।'
বলস্নভদী ইউপির চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুর রহমান শাহিন বলেন, 'রাস্তা না থাকার কারণে সোনার ডাঙ্গী গ্রামের মানুষের চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। আমি বেশ কয়েকবার পদক্ষেপে নিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। মূল সমস্যা ওই গ্রামে যাওয়ার জন্য সরকারি কোনো হালট নেই। এ ছাড়া ব্যক্তি মালিকানা জমি দিয়ে রাস্তা নিতে গেলে জমির মালিক বাধা দেয়। জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।'
ইউএনও আনিসুর রহমান বালী বলেন, 'রাস্তা না থাকায় গ্রামের মানুষের চলাচলের সমস্যার কথা আমরা জানতে পেরেছি। এখানে সরকারি কোনো হালট না থাকায় রাস্তা করতে সমস্যা হচ্ছে। গ্রামবাসীর সমঝোতায় যদি তারা জমি দিতে চায়, সে ক্ষেত্রে সরকারিভাবে রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।'