ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পাদুকা শিল্পীরা

প্রকাশ | ২৩ মে ২০১৯, ০০:০০

মো. বাহারুল ইসলাম মোলস্না, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
পৌর এলাকার পীরবাড়ি বাজারে একটি জুতার কারখানায় কাজ করছেন শ্রমিকরা -যাযাদি
পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যস্ত সময় পার করছে পাদুকা শিল্পীরা। এখানকার প্রায় দুই শতাধিক কারখানায় প্রায় ৬ হাজার পাদুকা শিল্পী দিন-রাত কাজ করছে। তাদের তৈরি পাদুকা জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। নিত্য-নতুন আধুনিক ডিজাইন ও টেকসই হওয়ার কারনে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের কাছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাদুকার (জুতা) চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। তবে পাদুকার কারখানার মালিকদের দাবি ভারতীয়, চায়না ও বার্মিজ জুতার সহজলভ্যতা ও দামে সস্তা হওয়ার কারনে তাদের এই পেশায় টিকে থাকতে কষ্ট হচ্ছে। তাদের দাবি দামে সস্তা হওয়ার কারনে ক্রেতারা বিদেশী জুতার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। তাই বাজার ধরে রাখতে গিয়ে তাদের বিভিন্ন দোকানীর কাছে বাকিতে জুতা বিক্রি করছে। পাদুকা কারখানার মালিক ও পাদুকা শিল্পীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাদুকা শিল্পের গোড়াপত্তন হয়। ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় এখানকার লোকজন এই শিল্পের প্রতি ক্রমেই আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। পরে আস্তে আস্তে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় তিনশতাধিক পাদুকার কারখানা গড়ে উঠে। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে না পারায় গত ৫ বছরের মধ্যে প্রায় শতাধিক কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে জিপসি, লালা, রক্সি, লিবার্টি, সিটি, ইসপি, রানা, আরমান, কলেজ, শাপলা, শামীম, হাসান, মুরাদ, দিনা, সু সহ প্রায় দুই শতাধিক পাদুকা কারখানায় কাজ করছে প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক। পৌর এলাকার পশ্চিম মেড্ডা পীর বাড়ী বাজার, সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের বটতলী বাজার, ভাটপাড়া, রাজঘর, সুহিলপুর ইউনিয়নের সুহিলপুর ও তালশহর পূর্ব ইউনিয়নের অষ্টগ্রামে রয়েছে পাদুকা কারখানা। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাদুকা কারখানা রয়েছে। এসব পাদুকা কারখানায় চামড়া, রাবার, সোল, ফোম ও রেক্সিন দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা তৈরি করা হচ্ছে। আধুনিক, রুচিশীল, নতুন ডিজাইন, মানসম্মত ও টেকসই পাদুকা তৈরী হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্রম্নত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুতার বাজার জনপ্রিয়তা লাভ করে। পাদুকা কারখানার কয়েকজন মালিক বলেন, তাদের উৎপাদিত জুতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কুমিলস্না, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষীপুর ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন অভিজাত মার্কেটেও পাওয়া যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাদুকা।