শরীয়তপুরে ধান নিয়ে কৃষকের কান্না

জেলায় মোট উৎপাদনের ০.৫০ শতাংশেরও কম ধান সংগ্রহের সিদ্ধান্ত খাদ্য বিভাগের

প্রকাশ | ২৪ মে ২০১৯, ০০:০০

কাজী নজরুল ইসলাম, শরীয়তপুর
শরীয়তপুরের মাঠে ধান কেটে বাড়ি ফিরছেন কৃষকরা। বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও তাদের মুখে নেই হাসির ঝিলিক। ন্যায্য মূল্য না পেয়ে তারা হতাশ -যাযাদি
বোরো ধান নিয়ে বিপাকে পরেছেন শরীয়তপুরের কৃষকরা। কেউ শুনছেন না প্রায় ৯০ হাজার ধান চাষির কান্না। বর্তমানে বাজারে ধানের দর অত্যন্ত কম হওয়ায় উৎপাদন খরচই ঘরে তুলতে পারছেন না তারা। এদিকে শরীয়তপুর জেলায় সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ন্যায্য মূল্যে খাদ্য বিভাগ যে পরিমাণ বোরো ধান ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে তার পরিমাণে খুবই কম, যা মোট উৎপাদনের ২১৮ ভাগেরও কম বা ০.৫০ শতাংশেরও নিচে। উৎপাদন মৌসুমে ধানের ন্যায্য মূল্য না পেলে ভবিষ্যতে ধান চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষক। চলতি মৌসুমে শরীয়তপুর জেলায় ছয়টি উপজেলায় ২৭ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। আর ৮৯ হাজার ৫ শত ১৮ জন কৃষক এ ধান চাষ করেছেন। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন। সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে প্রতি মণ বোরো ধান ১ হাজার ৪০ টাকা দরে ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর বর্তমানে বাজারে ধানের সর্বোচ্চ দর রয়েছে প্রতি মণ ৫০০ টাকা। খাদ্য বিভাগ শরীয়তপুর জেলা থেকে এ বছর মাত্র ৭৪০ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহের ঘোষণা দিয়েছে, যা জেলার মোট উৎপাদনের ২১৮ ভাগেরও কম। এদিকে খাদ্য অধিদপ্তর গত ২৫ এপ্রিল থেকে একযোগে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। শরীয়তপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৬১৩ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং মাত্র ৭৪০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হবে। সদর উপজেলার উত্তর বালুচরা গ্রামের মজিবুর রহমান পাহাড় বলেন, 'আমি এ বছর ৫ একর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। ধান উৎপাদনে আমার খরচ হয়েছে কমপক্ষে ৭০০ টাকা। আর বাজারে এক মণ ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা থেকে ৫২০ টাকা।' সখিপুর থানার উত্তর সখিপুর মাধু সরকার কান্দি গ্রামের ধান চাষি বাচ্চু মিয়া সরকার বলেন, 'আমাদের এখন আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো পথ নেই। ধান কাটার শ্রমিক পাই না, বাইরের জেলা থেকে উচ্চ মূল্যে শ্রমিক ভাড়া করে আনতে হচ্ছে।' শরীয়তপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক খোন্দকার নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, 'সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ২২ মে থেকে ধান ক্রয় শুরু করেছি। প্রতি একজন কৃষক ১৫০ কেজি থেকে ৩ হাজার কেজি পর্যন্ত ধান বিক্রি করতে পারবেন।'