রামগতিতে জেলা পরিষদের জায়গা দখল, পাল্টাপাল্টি মামলা
প্রকাশ | ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
রামগতি (লক্ষ্ণীপুর) প্রতিনিধি
লক্ষ্ণীপুরের রামগতিতে বন্দোবস্ত ও ইজারার নামে একই জয়গায় দখল ঘর নির্মাণ করায় পাল্টাপাল্টি মামলা করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত জায়গাটি হচ্ছে আলেকজান্ডার বাজার রহমানিয়া জামে মসজিদ-সংলগ্ন এলাকায়। তৎকালীন নোয়াখালী ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের ওই জায়গায়টি হচ্ছে ১৮ নম্বর আলেকজান্ডার মৌজার ৭৬১৭ দাগের ১.৯৮ একর ভূমি যার ধরন হচ্ছে পুকুর।
ওই দাগের পুকুরের দক্ষিণ পাড়ের উঁচু অংশে ১৮ শতক ভূমি ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড থেকে ১৯৫৪ সালে বন্দোবস্ত পান মফিজুর রহমান। ডিয়ারা জরিপ চলাকালে মফিজুর রহমানের নামে ১৫.৫৬ শতক ভূমি রেকর্ড হয়, বাকি ২.৪৪ শতক ভূমি জেলা পরিষদের মালিকানায় রয়ে যায়। ইজারা পাওয়ার আবেদন প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ ১ জুলাই ২০২১ তারিখে জহির উদ্দিন বাবর ও তছলিম উদ্দিনকে এক সনা ইজারা দেন। ইজারা দিয়ে জেলা পরিষদের ২৩ সালে ওই ভূমি পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করেন। পরে ইজারাদাররা ওই জায়গা ভোগদখল করতে থাকেন। এ ঘটনায় স্বত্ব ঘোষণা চেয়ে মফিজুর রহমানের ওয়ারিশদের পক্ষে ছেলে ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে ২৭ আগস্ট ২০২৩ লক্ষ্ণীপুর যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা করেন। মামলায় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং জেলা প্রশাসককে আসামি করা হয়। মামলায় আদালত শুনানি শেষে স্থিতাবস্থা জারি করে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। পরে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বাদী হয়ে ৪ জানুয়ারি ২০২৪ ইকবাল হোসেনগংদের ৫ জনের নাম উলেস্নখসহ রামগতি সহকারী জজ আদালতে স্বত্ব ঘোষণার ডিক্রি চেয়ে একটি পাল্টা মামলা করেন।
কিন্তু ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হলে এবং মামলা চলমান অবস্থায় ইকবাল হোসেনগংরা আদালতের নিষেধাজ্ঞা বলবত থাকা অবস্থায় জেলা পরিষদের জয়গায় ইজারাদারদের নির্মিত ঘর লুটে নিয়ে আবার নতুন ঘর তুলে জায়গা দখলে নেন। এ নিয়ে ইজারাদার ও ইকবাল হোসেনগংদের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
ইজারাদার তছলিম উদ্দিন জানান, ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের আলেকজান্ডার মৌজার ৯৭৩ খতিয়ানের ৭৬১৭ দাগের পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে ৬০০ বর্গফুট ভূমি জেলা পরিষদ আমাকে লিজ দেয়। আমি বিগত ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে একসনা লিজ নিয়ে ঘর তুলি। ২০২৫ সাল পর্যন্ত এর নবায়ন করা আছে। একই সঙ্গে জহির উদ্দিন বাবর ১৪০০ বর্গফুট ভূমি পাশাপাশি অংশে একই পদ্ধতিতে লিজ পেয়ে ঘর তুলে বসবাস করেন। বিগত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ইকবাল হোসেন সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের ঘর দখল করে। ওই জায়গায় নতুন করে ঘর তোলে।
ইকবাল হোসেন জানান, '৯৭৩ নম্বর পি,এস, খতিয়ানের ৭৬১৭ দাগের ১৮ শতক ভূমি আমার বাবা মফিজুর রহমান ১৯৫৪ সালে নোয়াখালী ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড থেকে বন্দোবস্ত পান। ডিয়ারা জরিপ ২.৪৪ ভূমি কম রেকর্ড হয়। তফসিল ভূমি আমাদের বাউন্ডারি করা জায়গা। ২০২৩ সালে আদালতে স্বত্ব ঘোষণা চেয়ে মামলা করলে আদালত স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। ফলে এটি এখন আমাদের জায়গা। অন্য কেউ নিজ নেওয়ার সুযোগ নেই।'