ঈশ্বরদী বেনারসিপলস্নীতে বেচাকেনার ধুম পড়েছে

প্রকাশ | ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতা
ঈদ সামনে রেখে ঈশ্বরদীর বেনারসিপলস্নীতে বেনারসি ও জামদানি বেচাকেনার ধুম পড়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা এই পলস্নীতে এসে ভিড় করছে। শ্রমিকরা দিনরাত ব্যস্ত হয়ে পড়ছে বেনারসি শাড়ি তৈরিতে। জানা গেছে, দেশের বেনারসি শাড়ি তৈরির বড় বাজার পাবনার ঈশ্বরদীতে। বেনারসি শাড়ি তৈরিতে এখানকার দক্ষ শ্রমিকদের সুনাম অনেক পুরনো। বছরের অন্যান্য সময়ে শ্রমিকরা আলসে সময় কাটালেও ঈদের সময় ক্রেতাদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এখন বেনারসিপলস্নীতে এদিক-সেদিক তাকানোর ফুরসত নেই শ্রমিকদের। আগেকার শ্রমিক ছাড়াও কাজের চাপে নতুন শ্রমিকদের নিয়োগ দিচ্ছে মালিকরা। প্রতিদিনই ঢাকা, রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল থেকে পাইকাররা বেনারসি ও জামদানি শাড়ি কিনতে ছুটে আসছে ঈশ্বরদীতে। প্রায় ২ হাজার থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা দামের বেনারসি শাড়ি এখানে পাওয়া যায়। এখানকার তৈরি ২৫ হাজার টাকা দামের বেনারসি শাড়ি ঢাকার বড় শোরুমে ৫০ হাজার টাকা দামে বিক্রয় হয় বলে জানালেন ঈশ্বরদী বেনারসিপলস্নীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মৃত আব্দুল মজিদ বেনারসির ছেলে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাভেদ বেনারসি। তিনি আরো জানান, বর্তমানে দেশের ঢাকার মিরপুর, রংপুরে বেনারসি শাড়ি তৈরি হলেও ঈশ্বরদী বড় বাজার। এখানে সপ্তাহে অর্ধকোটি টাকার বেনারসি ও জামদানি শাড়ি বিক্রি হয়। এই বেনারসিপলস্নীকে কেন্দ্র করে যে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে তাতে সহস্রাধিক শ্রমিক কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। এখানে একটি সাধারণ শাড়ি তৈরিতে ৩ দিন সময় লাগে। তিন দিন কাজ করার পর শ্রমিককে মজুরি দেয়া হয় ১৬শ থেকে ১৮শ টাকা। অপরদিকে দামি শাড়ি তৈরিতে হাতের কাজের প্রয়োজন হয়। সেখানে একটি শাড়ি তৈরিতে ৭ থেকে ৮ দিন সময় প্রয়োজন হয়। সেখানে শ্রমিককে মজুরি দেয়া হয় ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫শ টাকা। এই মজুরিতে সন্তুষ্ট নন শ্রমিকরা। বেনারসির শ্রমিক সানোয়ার বলেন, সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কাজ করি। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে এত অল্প পারিশ্রমিকে দিন চলে না। মালিকের কাছে বেতন বাড়ানোর দাবি জানালে মালিক রাগান্বিত হয়ে ওঠে। অন্যত্র চলে যেতে বলে। সরকার বেনারসি শাড়ি ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৪ সালে কারখানা তৈরির লক্ষ্যে ঈশ্বরদী পৌর এলাকায় স্বল্পমূল্যে ৯০টি পস্নট বরাদ্দ দেয়। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ৯০টি পস্নটের মধ্যে ১০টি পস্নট সচল রয়েছে। অন্য পস্নটগুলোতে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়নি। এ বিষয়ে বেনারসিপলস্নীর স্টেট অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবু বকর সিদ্দিক জানান, পস্নটগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণ ও মেশিন বসাতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংকটে ভুগছে ব্যবসায়ীরা। তিনি আরো জানান, তাদেরকে স্বল্পসুদে আর্থিক লোনের ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বেনারসিপলস্নীকে রক্ষা করা সম্ভব।