কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও পাবনার ঈশ্বরদীতে আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন শীতার্তরা -যাযাদি
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জেঁকে বসেছে শীত। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের রাজারহাট ও পাবনার ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মানুষ খড় দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছেন। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত খবর-
রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলায় ঘনকুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। শুক্রবার বিকালের পর থেকে শনিবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ঘনকুয়াশায় ঢাকা পড়ে পথঘাট ও প্রকৃতি। কনকনে ঠান্ডার কারণে মানুষ খড়ের ঢিবিতে আগুন দিয়ে ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। অনেকে পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করছে। কিন্তু অসহায় দুস্থ মানুষগুলো টাকার অভাবে গরম কাপড় না পেয়ে থরথর করে কাঁপছে। শনিবার সকালে রাজারহাট উপজেলাসহ এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন।
দিনের অধিকাংশ সময় সূর্য মেঘে ঢাকা থাকছে। বিকালের পর থেকে সকাল পর্যন্ত হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হতে থাকে। ঘনকুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করছে। রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তবে শীতজনিত কারণে কোনো মৃতু্যর খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে কুয়াশা ও শীতের কারণে কৃষি শ্রমিক, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো বিপাকে পড়েছে। তারা সময়মতো কাজে যেতে পারছেন না। অপরদিকে হিমেল বাতাসে তীব্র শীতের কবলে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীর বাঁধ ঘেঁষা ও চরের হতদরিদ্র মানুষ।
উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের চাকিরপশার তালুক গ্রামের দিনমজুর সেকেন্দার আলী (৭০) বলেন, 'কয়েকদিন থেকে খুব ঠান্ডা ও কুয়াশা। কাজ করা খুব সমস্যা হইছে বাহে। আজকেও শীতে রাস্তা দেখায় যায় না। কাজ করার সময় হাত বরফ হয়ে যায়।'
শনিবার রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, এ মাসে তাপমাত্রা আরও কমে ২-৩টি শৈতপ্রবাহ এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে দেশের উত্তরের জনপদ ঈশ্বরদী। শনিবার পাবনার ঈশ্বরদীতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে রেকর্ড গড়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই আশপাশের অন্যান্য উপজেলার চেয়ে ঈশ্বরদীর তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কম রেকর্ড করা হচ্ছে। ফলে সন্ধ্যা নামার আগেই শীত জেঁকে বসছে এ জনপদে। রাতে কনকনে শীতের পাশাপাশি ঘনকুয়াশার উপস্থিতিও লক্ষ করা যাচ্ছে। সকালে সূর্যেও দেখা মিলছে অপেক্ষাকৃত দেরিতে। যার ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে আঞ্চলিক এবং মহাসড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে দূরপালস্নার গাড়ি। ঈশ্বরদী আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. নাজমুল ইসলাম জানান, আজ সকাল ৬টায় ঈশ্বরদীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা কিনা এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এ অঞ্চলের।
