অপরাধ না করেও মামলার আসামি রাহিম
প্রকাশ | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
কালিহাতী (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
দোকান খোলা রেখে অসুস্থ নানীকে দেখতে গিয়েছিল রাহিম। তার অনুপস্থিতিতে দোকানের ভিতরে বাবলু নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। অপরাধ না করেও মাটি ব্যবসায়ী বাবলু হত্যা মামলার আসামি তারা দুই ভাই। টাঙ্গাইলে কালিহাতী উপজেলার নাগবাড়ি ইউনিয়নের গান্ধিনা বাজারে রড-সিমেন্টের দোকান করেন এই গ্রামের মো. বছির মিয়ার ছেলে মো. রাহিম মিয়া। তার ভাই সাদেক আলী একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন।
চলতি বছরে গত ১৬ নভেম্বর শনিবার বিকালে রাহিম তার দোকান খোলা রেখে মায়ের সাথে পার্শবর্তী জোড়বাড়ি গ্রামে তার অসুস্থ নানীকে দেখতে যায়। সন্ধ্যার পর খবর পায় তার দোকানে বাবলু নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এ খবর শুনে তার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। ১৮ নভেম্বর সোমবার ভোরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবলুর মৃতু্য হয়। রাতে নিহতের বাবা কামাল হোসেন বাদী হয়ে হারুন নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নামে কালিহাতী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ রাহিমের দোকানটি সিলগালা করে দেয়। মামলার আসামি হয় দোকান মালিক রাহিম ও তার ভাই সাদেক আলীকেও।
রাহিমের দোকানের পাশের চা দোকানদার রিপন জানান, পলাশতলীর মনির ও বাবুল তার দোকানে এসে চা দেওয়ার কথা বলে। এ সময় বাবুলে ভাগ্নে হাসান এসে তাকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাহিমের দোকান খোলা পেয়ে বাবলুকে দোকানে ভিতরে নিয়ে সাঁটার বন্ধ করে দেয়। তার পর বাবলুর চিৎকার শুনা যায়। স্থানীয়রা এগিয়ে আসার আগেই চলে যায় ওই হামলাকারীরা। এসময় দোকান মালিক রাহিম ও তার ভাই দোকানে ছিল কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাঝে মাঝে রাহিম দোকান খোলা রেখে বিভিন্ন জায়গায় মালামাল দিত ও বাকি টাকা উঠানোর জন্যও যেত। ওই দিন বিকালে রাহিম তার নানীকে দেখতে যাবে বলেছিল। সন্ধ্যার পর আর দোকানে আসে নাই বা আমি দেখি নাই।
রাহিমের দোকানের কর্মচারী ভ্যানচালক বাবুল বলেন, সন্ধ্যায় আমি দোকানে ছিলাম, রাহিম ভাই দোকানে ছিল না। হাসান ভাই দোকানে বসে ছিল। আমি দোকান বন্ধ করে চলে যেতে চাইলে হাসান ভাই আমাকে দোকান খোলা রেখে চলে যেতে বলেন। আমি রাহিম ভাইকে ফোন দিয়ে বাসায় চলে যাই। বাসায় যাওয়ার পর জানতে পারি দোকানে বাবুলকে কুপিয়েছে কয়েকজন মিলে।
রাহিমের মা জানান, রাহিম আমার সাথে ওর অসুস্থ নানীকে দেখতে যায়। রাহিম দোকানে না থাকার সুযোগে তার দোকানে বাবলু নামে একজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে হাসপাতালে তার মৃতু্য হয়। সেই মামলায় আসামি করা হয় আমার দুই ছেলে রাহিম ও সাদেক আলীকে।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিয়ান মাদ্র্রাসাপাড়ার কামাল হোসেনের ছেলে বাবলু মিয়া (৩৫) মৃতু্যর আগে স্বজনদের কাছে তার মৃতু্যর জন্য দায়ীও হামলাকারীদের নাম বলে গেছেন। এসংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওই ভিডিও রাহিম ও তার ভাই জড়িত থাকার কথা বলা হয়নি।
এ বিষয়ে কালিহাতী থানার ওসি তদন্ত ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, আমাদের তদন্ত চলছে। দোকান মালিক রাহিম ঘটনাস্থলে ছিল কি-না সেটা তদন্তের পর বলা যাবে।