সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পন্ড রাবির পরিত্যক্ত বাসের নিলাম

প্রকাশ | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

রাবি প্রতিনিধি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বর্তমানে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা ৯টি বাস ও ৩টা মাইক্রোবাস বিক্রির জন্য নিলামে তুললেও সিন্ডিকেটের কারসাজিতে তা পন্ড হয়েছে। পরিবহণ দপ্তরের এই বাসগুলোর ন্যায্য মূল্যে না পাওয়ায় ৭-৮ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরিবহণ দপ্তরের সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ নভেম্বর বিকাল ৪টায় অফিস চলাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অফিস কক্ষে রক্ষিত বাক্সে নিলামের দরপত্র ফেলার কথা থাকলেও স্থানীয় এক সক্রিয় সিন্ডিকেট চক্রের যোগসাজশে আশানুরূপ দরপত্র পড়েনি। এমনকি নিলামে একটা বাসে সম্ভাব্য দর ১০ লাখ টাকা ঠিক করলেও ১ থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রির জন্য দরপত্র দিচ্ছেন টেন্ডারকারীরা। সর্বশেষ কোনো উপায় না পেয়ে নিলাম বাতিল করতে বাধ্য হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সরেজমিন দেখা যায়, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের পেছনে তিনটা এবং পরিবহণ দপ্তর এলাকায় ছয়টা বাসসহ তিনটি অচল মাইক্রোবাস পড়ে আছে। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় বাসগুলোর ভেতরে-বাইরে জমেছে ধুলা-ময়লার স্তূপ। ধরেছে জং। খসে পড়ছে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। অনেক সিট ভেঙে গিয়েছে আবার কোনোটির চাকা মাটির নিচে দেবে গেছে। পরিবহণ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০১৮ সালে নিলামের মাধ্যমে ৫টি অচল বাস বিক্রি করা হয়। তবে ওই বাসগুলোর নিলাম প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৬ সালে। তখন পাঁচটি অচল বাস বিক্রি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় হয়েছিল ৫ লাখ টাকার ওপরে। এর আগের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১১-১২ সালের দিকে। ২০১৬ সালের পর থেকে অচল হওয়া বর্তমানে গাড়িগুলোকে অপসারণযোগ্য (রিমুভেবল) হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া পুরাতন বাসগুলোর যন্ত্রাংশ বাজারে না পাওয়া ও জ্বালানি খরচ বেশি লাগা, মেরামতের খরচ বেড়ে যাওয়া, ফিটনেসে ঘাটতিসহ বিভিন্ন কারণে গাড়িগুলোকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নিলাম সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক মো. আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, 'বাস নিলামে তোলার পর স্থানীয় সিন্ডিকেট চক্র পুরো নিলামকে এক হাতে করে নেয়। তারা নিজেদের মতো করে বক্সে দাম ফেলে। ফলে আশানুরূপ দাম পাচ্ছি না। এমনকি ১০ লাখ টাকার একটা বাস তারা মাত্র দেড় লাখ টাকার দরপত্র করছে। এ টেন্ডার যারা ফেলে তাদেরকে স্বেচ্ছায় ফেলতে দেয় না। তারা যদি স্বাধীনভাবে ফেলতে পারত তাহলে আমরা অ্যাকুরেট দামটা পেতাম। এ সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে আমরা পস্ন্যান করছি।'