মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে এভাবেই পড়ে রয়েছে মাওয়া-লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি প্রধান সড়কের ওপর নির্মাণাধীন সেতুর কাজ -যাযাদি
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া-লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি প্রধান সড়কের ওপর নির্মাণাধীন তিনটি সেতুর কাজে ধীরগতি দেখা গেছে। এর ফলে খানাখন্দে বেহাল বাইপাস সড়ক ও জরাজীর্ণ বেইলি সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এ রুটের যানবাহন ও জনসাধারণ।
পরিবহণ চালক ও পথচারীরা বলছে, খানাখন্দে ভরা বাইপাস সড়ক ও বেইলি সেতুগুলো সরু ও নড়বড়ে হওয়ার কারণে দুই প্রান্তে যানজটের সৃষ্টি হয়। যার কারণে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীসহ যানবাহনগুলোকে। তাই দ্রম্নত সেতু নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয় বাসিন্দা মামুনর রশীদ বলেন, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, পূর্ববঙ্গসহ প্রতিদিন এই পথে যাতায়াত করেন কয়েক লাখ মানুষ। ঢাকা না গিয়ে শর্টকাট রাস্তা হিসেবে এই পথ ব্যবহার করে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সংযোগ এই প্রধান সড়কে যাত্রীর চাপ অনেক। তাই নির্মাণাধীন সেতুর বাইপাস সড়কে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হয়। ৪০ মিনিটের পথ পেরোতে সময় লাগছে কয়েক ঘণ্টা। অটোরিকশা চালক সালাম বলেন, ঘোলতলী ও জোড়পোল বেইলি সেতুতে ওঠার সংযোগ সড়কের খানাখন্দে বেহাল দশায় প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা, সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি ওঠাতে হয়।
পথচারী সাইদুর রহমান বলেন, ঘোলতলী নির্মাণাধীন সেতুর পাশে বেইলি ব্রিজে উঠতে গিয়ে তাকে বহনকারী অটোরিকশাটি উল্টে যায়। এতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা আহত হন। ১ বছরের বেশি সময় ধরে সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। দ্রম্নত নির্মাণকাজ ও বাইপাস সড়ক সংস্কারের দাবি জানান।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জোড়পোল, ঘোলতলী ও কলিকাতা ভোগদিয়া সেতুর কাজের ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। নির্ধারিত সময় চলতি বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তাই দ্রম্নতগতিতে এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ।
জানা যায়, ২ লেন বিশিষ্ট সেতু তিনটির দৈর্ঘ্য ৬০, ৪০ ও ৪৪ মিটার এবং প্রস্থ ৭ দশমিক ৩ মিটার। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় এক প্যাকেজে এ ৩টি কংক্রিট সেতুর মধ্যে ৬০ মিটার কলিকাতা ভোগদিয়া, ৪০ মিটার জোড়পোল ও ৪৪ মিটার ঘোলতলীতে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। মুন্সীগঞ্জ সড়ক বিভাগের অধীনে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুর স্থানে কংক্রিটের সেতু দ্বারা প্রতিস্থাপনের প্রকল্প চলমান আছে। আরপি কনস্ট্রাকশন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি এই সেতুর নির্মাণকাজ করছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার গাঁওদিয়া ও বেজগাঁও ইউনিয়নের লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি প্রধান সড়কে এ সেতুগুলোতে চলছে কর্মযজ্ঞ। কলিকাতা ভোগদিয়া ও জোড়পোল সেতুর পিলারের ওপর চলছে বিম নির্মাণকাজ। সেতুর সংযোগ সড়কের দুই পাশে সাবেক সেতুর গাঁথুনি পিলারের ওপর বিম নির্মাণ করার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া ঘোলতলী সেতুর ওপরে ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কের কাজ চলছে।
মুন্সীগঞ্জের সড়ক ও জনপদের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নাজমুস হোসেন সাকিব জানান, সেতুর নির্মাণকাজের মেয়াদকাল আগামী বছরের মার্চ মাসের ১২ তারিখে শেষ হবে। এরই মধ্যে বাইপাস সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে। সেতুর কাজ দ্রম্নতগতিতে খুব গুরুত্বসহকারে করা হচ্ছে। সেতুর কাজ ইতোমধ্যে ৭৫ শতাংশ হয়ে গেছে। জোড়পুল সেতুতে সাবেক গঁাঁথুনির ওপর বিম নির্মাণ করার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেভাবে সেতুর ডিজাইন করা আছে সেভাবেই কাজ করা হচ্ছে।