বাঁশের সাকোঁতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার

আধুনিক যুগেও ভাগ্যবদল হয়নি রাউজানের কাগতিয়ার জেলে পাড়ার মানুষের

চট্টগ্রামের রাউজানে কাগতিয়া জেলে পাড়ার মানুষের একমাত্র অবলম্বন বাঁশের সাঁকো -যাযাদি

প্রকাশ | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:২০

মীর আসলাম, রাউজান (চট্টগ্রাম)
যুগের চাহিদায় অঘাট ঘাট হয়েছে, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্য বদল হয়েছে। লাখপতি থেকে কোটিপতি হয়েছে অনেকেই। কিন্তু যুগের ঘূর্ণিয়মান চাকায় ভাগ্য বদল হয়নি কাগতিয়া জেলে পাড়ার মানুষের। আদিকাল থেকে বাপ-দাদার গ্রামটি যেমন ছিল এখনো থেকে গেছে সেই অবস্থায়। বসবাস করতে হচ্ছে সেঁতসেতে পরিবেশে। চলাচল করতে হচ্ছে খালের উপর বাঁশের আঁটি বাঁধা সাঁকোতে। তবুও সেটি মানুষের সহযোগিতায়। এমন এক দুর্বিষহ পরিবেশে এখনো বসবাস রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাগতিয়া খালের পাড়ের জেলে পাড়ার মানুষের। এ গ্রামে ৬০ পরিবারের বসবাস। যুগে যুগে এই পাড়ার নারী পুরুষ শিশু অভ্যস্থ হয়ে আছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলে। ওই এলাকার জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাউজানের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক মানুষের ভাগ্য বদল হয়েছে। আধুনিক এ যুগে এই জেলে পাড়ার ৬০টি পরিবারের ভাগ্য বদল হয়নি। এখনো তাদের চলাচল করতে হচ্ছে বাঁশের সাঁকোতে। জেলে পাড়ার বাসিন্দা অজিত জলদাস দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী ও তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী দুইজনই এসে জেলের পাড়ার মানুষের কষ্ট দেখে এখানে একটি পথ ব্রিজ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাদের এ ঘোষণা প্রতিফলন তারা দেখেননি। এ পাড়ার এক গৃহবধূ টকি জলদাস বলেন, এই সাঁকো দিয়ে পাড়াপাড় করতে গিয়ে অনেক সময় শিশুরা পা পিছলে খালে পড়ে আহত হয়। বয়স্কদেরও পারাপার করতে হয় নৌকায় চড়ে। জেলা পাড়ার মানুষের সুখে দুখে থাকা কাগতিয়া বাজারের ব্যবসায়ী নজুম খা চৌধুরী জেলে পাড়ার মানুষের দুঃখ দুদশার কথা জানিয়ে বলেন, কাগতিয়া জেলে পাড়ার অবস্থান পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নে হলেও তাদের একমাত্র চলাচলের পথ বিনাজুরী ইউনিয়নের কাগতিয়া বাজার দিয়ে। এক সময় ওই পাড়ার মানুষ যাওয়া আসা করতো নৌকায়। তিন দশক থেকে তারা খালের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে পারাপারের সুযোগ সৃষ্টি করলেও সাঁকোর সঙ্গে মুল রাস্তার সংযোগ ছিল না। তিন দশক আগে বিনাজুরী ইউনিয়নের প্রয়াত সাবেক চেয়ারম্যান রফিক চৌধুরী নিজের কিছু জায়গা ছাড় দিয়ে সাঁকোর সংযোগে রাস্তা করে দিয়েছিলেন। সেই রাস্তাটিও যুগে যুগে সংষ্কারের অভাবে এখন খাল পাড়ের সঙ্গে মিশে আছে। পাড়ার লোকজনকে খালের জোয়ারের হাঁটু পানি মাড়িয়ে এখন বাজারের আসতে হয়। তিনি জানান, প্রতিবছর বন্যায় ভেসে যায় বাঁশের সাঁকোটি। বাজারের ব্যবসায়ী রাজিব চৌধুরীসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা দিয়ে আবার জেলে পাড়ার মানুষকে সাঁকো তৈরি করতে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, জেলে পাড়ার সঙ্গে রয়েছে কাগতিয়া এশাতুল উলুম কামিল মাদ্রাসা।