ঝিনাইদহে অপরিকল্পিত খাল খনন করায় ধ্বসে পড়ছে বাড়িঘর ও ফসলি জমি -যাযাদি
ঝিনাইদহে অপরিকল্পিত খাল খনন আর মাটি বিক্রি করায় হুমকির মুখে পড়েছে রাস্তা, বাড়িঘর ও ফসলি জমি। ইতমধ্যে ধ্বসে গেছে অর্ধশত পরিবারের বসতভিটাসহ স্থাপনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, খাল খননে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম আর খাল পাড়ের মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দাবি অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। নেওয়া হচ্ছে কার্যকরী ব্যবস্থা।
২০২২-২৩ অর্থবছরে খালটি খনন করে ইউনুস এন্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ১৩.৫ কিলোমিটার খালটি খননে ব্যয় হয়েছিল ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
স্ত্রী-সন্তান, ভাই ও মা'কে নিয়ে মাত্র ১ শতক জমিতে মহাসড়কের পাশে খাল পাড়ে বসবাস করেন হরিনাকুন্ডু উপজেলার মকিমপুর গ্রামের কৃষক আলম মন্ডল। গত কয়েকদিন আগে ভাঙন শুরু হলে তার বসতভিটার খালগর্ভে চলে যায়। বসবাসের একমাত্র স্থানটি খালের ভেঙ্গে পড়ায় এখন খোলা আকাশের নিচে রান্নাসহ বসবাস করছেন হতদরিদ্র এ পরিবারটি।
একইভাবে মকিমপুর গ্রামের বাগমারা খাল পাড়ের অর্ধশত পরিবার এখন ভাঙনের ঝুকিতে রয়েছে। খালের দুই পাশের বাসিন্দাদের গাছপালা, বসতঘর, টয়লেট ভেঙে গিয়েছে। অন্যদিকে খাল পাড়ে থাকা এলজিইডির সড়কেরও একই অবস্থা। কোন কোন স্থানে সড়কের অর্ধেক নেমে গেছে খালে। হুমকির মুখে রয়েছে অন্যান্য বসতভিটা ও ফসলী জমি।
মশিয়ার রহমান নামের এক কৃষক জানান, 'আমার জমি খালে যে কোন সময় বিলিন হয়ে যেতে পাড়ে। এখন আমি কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না।'
ইউনুছ আলী নামের এক কৃষক জানান, খাল খননের সময় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন খাল পাড়ের মাটি বিক্রি করে দেওয়ায় এ সমস্য দেখা দিয়েছে। যদি খালের মাটি বিক্রি না করতো তাহলে এ সমস্য হতো না।
সবুজ হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, খালের ভাঙনে সড়কটি প্রায় বিলীন হয়ে গেছে। যদি এখনি খালের পাড় বাঁধা না হয় তাহলে সড়কটি দিয়ে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে যাবে।
তবে এই সড়ক দিয়ে গ্রামের কৃষকেরা মাঠ থেকে ফসল আনা-নেওয়ার জন্য আর ব্যবহার করতে পারবে না।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধানে কাজ করছেন তারা।