তুচ্ছ ঘটনায় চার জেলায় বৃদ্ধসহ চারজনকে হত্যা

প্রকাশ | ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:২৬

স্বদেশ ডেস্ক
চার জেলায় তুচ্ছ ঘটনায় বৃদ্ধসহ চারজনকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কুমিলস্না, নারায়ণগঞ্জের ফতুলস্না, নরসিংদীর বেলাবো ও রংপুরের মিঠাপুকুরে এসব হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। আঞ্চলিক স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে বিস্তারিত ডেস্ক রিপোর্ট- স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না জানান, কুমিলস্নায় ব্যাডমিন্টন খেলাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া থামাতে গিয়ে কিল-ঘুষির শিকার হয়ে রুহুল আমিন নামে এক বৃদ্ধের মৃতু্য হয়েছে। গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার রামচন্দ্রপুর (ফলদারপাড়) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর দক্ষিণ উপজেলার বারোপাড়া ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামে শুক্রবার সকালে ব্যাডমিন্টন খেলা চলছিল। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত রুহুল আমিন (৬৫) তার বাড়ির ছেলেদের পক্ষ নিয়ে ঝগড়া থামাতে গেলে প্রতিপক্ষের ছেলেরা তার উপর চড়াও হয় এবং তাকে কিল-ঘুষি মারলে তিনি আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যায় সদর দক্ষিণ থানার এসআই দিলীপ কুমার মজুমদার জানান, কুমেক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বৃদ্ধের মরদেহ তার স্বজনদের হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃতু্যর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের ফতুলস্নায় পূর্ব শত্রম্নতার জের ধরে সিয়াম (১৮) নামে এক হোসিয়ারী শ্রমিককে কুপিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। তবে হত্যাকারীরা স্থানীয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে নিহতের স্বজনরা এমনটাই অভিযোগ করেন। গত শুক্রবার রাতে ফতুলস্নার দক্ষিণ শিহাচর তক্কারমাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুরে নিহতের বাবা আব্দুল হালিম খান বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উলেস্নখ করে মামলার এজাহার দায়ের করেন। নিহত সিয়াম ফতুলস্না থানার পিলকুনী পাচতলা বরিশাল টাওয়ার সংলগ্ন আব্দুল হালিম খানের ছেলে। জানা যায়, পূর্ব শত্রম্নতার জেরে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক নজরুলের ভাগিনা সায়মন বাহিনীর লোকজন কয়েকজনকে মারধর করে। পরে সন্ত্রাসীরা সিয়ামকে রাস্তায় একা পেয়ে তুলে নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। একপর্যায়ে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফতুলস্না মডেল থানার ওসি শরিফুল ইসলাম জানান, পূর্ব শত্রম্নতার জের ধরে সিয়ামকে হত্যা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীর মাধবদী কাঁঠালিয়ায় টেক্সটাইল মালিক নুর মুহাম্মদকে চাঁদা না দেওয়ায় কারখানার শ্রমিকসহ কয়েকজন মিলে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি শনিবার নিশ্চিত করেন মাধবদী থানার ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের কৌলাতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত পাওয়ারলুম মালিক ওই গ্রামের আলকাছ মিয়ার ছেলে নুর মোহাম্মদ(৪৫)। ওসি মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আরও জানান, খবর পেয়ে শনিবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদীর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লাশের শরীরের মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে কি কারনে হত্যাক তার সঠিক কারণ এখনো বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় একজন পাওয়ারলুম শ্রমিকসহ ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নরসিংদী (বেলাব) প্রতিনিধি জানান, নরসিংদীর বেলাবোতে ছেলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাফিয়া বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধার মৃতু্য হয়েছে। দুই ভাইয়ের পারিবারিক কলহের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ বাড়িতে উপজেলার বটেশ্বর গ্রামে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিহতের বড় ছেলে তোফাজ্জল হোসেন সুজন মাথায় আঘাত করেন। পরে শনিবার ভোর ৩.৩০টায় বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সাফিয়া বেগম আমলাব ইউনিয়নের বটেশ্বর গ্রামের মৃত হোসেন আলীর স্ত্রী। এ ঘটনায় ছোট ছেলে তৌহিদ হোসেন তার ভাই তোফাজ্জল হোসেন সুজন, ভাইয়ের স্ত্রী রেখা আক্তার এবং ভাতিজা আসিফ মিয়াকে আসামি করে বেলাবো থানায় মামলা দায়ের করেন। সহকারি পুলিশ সুপার (বেলাব-রায়পুরা) সার্কেল আফসান আল আলম বলেন, 'আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, ছোট ছেলের অভিযোগে ভিত্তিতে প্রথমে মারামারির মামলা হলেও মারা যাওয়ার পর হত্যা মামলার ধারা সংযুক্ত করা হয়। ১ নং আসামি তোফাজ্জল হোসেন সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি জানান, রংপুরের মিঠাপুকুরে তিনদিনের ব্যবধানে দুই মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার সকালে উপজেলার ০৮ নং চেংমারী ইউনিয়নের ফকির হাট গিলাঝুকি দক্ষিণ পাড়া আমগাছের নিচে ঝুলন্ত অবস্থায় এক অজ্ঞাত বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার এবং গত বুধবার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের খুটির পাড়ায় মুরগির খামারের এক কেয়ারটেকারকে রাতে ছুরিকাহত করে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সকালে আমবাগানে আনুমানিক ৫৫ থেকে ৬০ বছরের অজ্ঞাত এক বৃদ্ধের মরদেহ আমগাছের ডালের সঙ্গে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ দুপুরে লাশ উদ্ধার করে মিঠাপুকুর থানায় নিয়ে আসে। এ রিপোর্ট লেখা অবধি লাশের পরিচয় সনাক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন মিঠাপুকুর থানার ওসি (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম। মরদেহের পরিচয় শনাক্ত এবং এটা হত্যা না আত্মহত্যা সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম কাজ করছে বলেও তিনি জানান।