দুইজন গ্রেপ্তার

ঝিনাইদহে আলোচিত চিতাবাঘ হত্যায় বন বিভাগ ও প্রশাসনে তোলপাড়

প্রকাশ | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ঝিনাইদহে আলোচিত মেছোবাঘ হত্যা ও হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার ঘটনায় প্রশাসনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে। এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর বন্যপ্রাণী হত্যার অভিযোগে যশোর শার্শা ওয়াইল্ড লাইফ কন্ট্রল ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। ২১ ডিসেম্বর বিকালে পুলিশ ওই দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তাররা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খেদাপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে ইজিবাইক চালক জাহিদুল ইসলাম (৩৫) ও নলডাঙ্গা বাজারের ইজিবাইক স্ট্যান্ডের স্টাটার ও সদর উপজেলার খড়াশুনি গ্রামের মৃত শামছুদ্দিন লস্কারের ছেলে মোশারফ হোসেন (৬০)। বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১৯ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ-নলডাঙ্গা সড়কের কাদিপুর নামক স্থানে একটি চিতাবাঘটি পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে জাহিদুল ইসলাম নামক ওই ইজিবাইক চালক মৃত বাঘটি বাজারে নিলে ইজিবাইক স্টান্ডে উপস্থিত কিছু মানুষ মৃত বাঘটি একটি দোকানোর সামনে খুটির সঙ্গে বেঁধে তারা গলায় ফুলের মালা দিয়ে সজ্জিত করে। বাঘের মুখের মধ্যে সিগারেট আর সামনে চায়ের কাপে চা রেখে ছবি তোলে। পরে সেটা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। এছাড়া ওই ছবিতে কিছু লেখা হয় যা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মানহানীকর। এটা দেখে বনবিভাগের ঝিনাইদহ ও যশোর সব ইউনিটের কর্মকর্তারা শুক্রবার ঘটনাস্থলে আসেন। তারা সরেজমিনে তদন্ত করে ঘটনা যাচাই শেষে কালীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দেন। কাদিপুর জামে মসজিদের ইমাম নূর ইসলাম জানান, তিনি ভোরে নামাজ পড়ানোর পর ফেরার পথে বাঘটিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। তার ধারনা রাতের কোনো এক সময় চলন্ত যানবাহনে ধাক্কা খেয়ে বাঘটি মারা গেছে। এরপর সকালে ইজিবাক চালকরা সেটা বাজারে নিয়ে গেছে। ওয়াইল্ড লাইফ এন্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের কালীগঞ্জের আইন বিষয়ক সম্পাদক আদনান মীম জানান, তারা ঘটনাটি তদন্ত করছেন। কিভাবে বাঘটি মারা গেল এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে যেভাবে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল সেটা ঠিক হয়নি। ঘটনার পর তারা এলাকায় গিয়ে সচেতনতামূলক সভাও করেছেন। আঞ্চলিক বন সংরক্ষক কর্মকর্তা জহির আকন জানান, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি দেখে সেখানে কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছিলেন। ঘটনা নিয়ে থানায় মামলা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ আসামি গ্রেপ্তার করেছে। কালীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত মোফাজ্জেল হক জানান, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগে তারা দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছেন। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।