খুলনার রূপসায় বসবাস না করায় তালাবদ্ধ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের উপহারের ঘর -যাযাদি
খুলনার রূপসা উপজেলায় বিগত সরকারের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দেওয়া উপহারের বেশির ভাগ ঘরেই ঝুলছে তালা। থাকছেন না বরাদ্দপ্রাপ্তরা। তবে বরাদ্দ পাওয়ার পরও যারা এসব ঘরে থাকছেন না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
সংবাদটি দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর উপজেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সব ঘরে বসবাস করে না তাদের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের সামন্তসেনা নেহালপুর, ঘাটভোগ ইউনিয়নের শিয়ালী, আলাইপুর, গোয়াড়া, টিএসবি ইউনিয়নের পাচানী ও খাজাডাঙ্গাসহ উপজেলায় ৫৪৩টি ঘর বরাদ্দ হয়। এর অধিকাংশ ঘরে কেউ থাকে না। ঘরে না থাকার ফলে ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে সেগুলো। ফাঁকা ঘরে এখন খড়কুটো ও গরু-ছাগল রাখা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের নেহালপুল এলাকায় দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর যাদের নামে বরাদ্দ হয়েছে শুরু থেকে একদিনের জন্য তারা বসবাস করেননি ওইসব ঘরে। ঘর দেওয়া থেকে আজ পর্যন্ত যারা ঘরে থাকেননি তাদের সংখ্যা ১০৭ জন। নোটিশ দেওয়ার পরে কিছু ঘরে লোক আসতে শুরু করেছে। এখনো যারা আসেনি তাদের তালিকা ইতোমধ্যেই শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারীরা জানান, তালাবদ্ধ করে বেশিরভাগ লোকজনই চলে গেছেন। তাদের কেউ থাকেন নিজ বাড়িতেই, কেউ থাকেন ঢাকায়। এমনও আছেন, ঘর পেয়েই তালাবদ্ধ করে চলে গেছেন, আর কখনো আসেননি। এজন্যই বেশিরভাগ ঘর ফাঁকা পড়ে আছে। জায়গা কম পড়লে কেউ ফাঁকা ঘরগুলোতে খড়কুটো ও গরু-ছাগল বেঁধে রাখছেন।
আশ্রয়ণকেন্দ্রে বসবাসকারী মামুন বলেন, যারা ঘর পাওয়ার পরও ঘরে থাকে না, তাদের ঘর বাতিল করে দেওয়া উচিত। এসব ঘর যারা পাওয়ার যোগ্য তাদের দেওয়ার আবেদন করেছেন উপজেলা প্রশাসনের কাছে।
দাউদ নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, অনেক জায়গায় যাতায়াতের রাস্তা নেই, মানুষের বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বৃষ্টি হলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। পানি জমে যাতায়াতসহ আরও অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়।
আশ্রয়ণের বাসিন্দা ময়না বেগম বলেন, যারা ঘর পেয়েও সেখানে থাকছেন না, তাদের আগে থেকেই বড় বড় ঘরবাড়ি রয়েছে। শুধু দখলে রেখেছেন। এই এলাকাতেই ভূমিহীন অনেকে রয়েছেন, যারা ঘর পাননি। তাদের এসব ঘর দেওয়ার দাবি করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু বলেছেন, 'সংবাদ প্রকাশের পর আমাদের নজরে এলে আমরা দ্রম্নত ব্যবস্থা নিয়েছি। যারা ঘরে থাকে না তাদের নোটিশ প্রদান করেছি। তারপরও যারা ঘরে আসবে না তাদের নামের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের দেওয়ার আবেদন করা হবে জেলা প্রশাসকের কাছে।