পাবনায় অবৈধ ১৪৩ ইটভাটার কার্যক্রমে পরিবেশের বিপর্যয়

প্রকাশ | ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

পাবনা প্রতিনিধি
কৃষি আবাদি জমির ক্ষতি করে পাবনায় গড়ে উঠেছে দেড় শতাধিক অবৈধ ইট ভাটা। অনৈতিক ভাবে পুলিশ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য। অবৈধ এসকল অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠায় এবং মাটি কেটে সরবরাহ করার ফলে কৃষি জমি হ্রাস পেতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, পাবনা জেলায় ১৭৩টি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে। ৩০টি ইটভাটার পরিবেশের ছাড়পত্র থাকলেও ১৪৩টি চলছে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে। এর মধ্যে শুধু ঈশ্বরদী উপজেলাতেই ৫৫টি ইটভাটার কার্যক্রম চলছে। ঈশ্বরদীর বেশিরভাগ ইটভাটা লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কৃষি জমিতে অবস্থিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সুত্র জানায়, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এসব কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে ইটভাটার মাটি কাটার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মোটা অংকের অর্থের লেনদেন হয়। এছাড়াও ইটভাটার মালিকদের বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে বিপুল অর্থের যোগান যায় সংশ্লিষ্ট সকল মহলে। ফলে বারবার এইসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে উদ্যোগ নিলেও রহস্যজনকভাবে তা থেমে যায়। পরিবেশবিদরা বলছেন, যেভাবে ইট পুড়িয়ে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে তাতে অতি নিকটে আমাদের ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যের মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষ করে পাবনার ঈশ্বরদীর লক্ষীকুন্ডা, সদরের হেমায়েতপুরের অবস্থা ভয়াবহ পর্যায়ে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আশপাশের ঘরবাড়ি, গাছপাড়া, বাগানগুলো নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি কাশি-শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। কৃষিজমি উর্বরতা হারাচ্ছে এবং খাদ্য উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনার উপ-পরিচালক ড. জামাল উদ্দীন বলেন, 'আমাদের আবাদি কৃষি জমি কমছে। একটা ইটভাটার পাশে এখন আরেকটা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই আবাদি কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। আমরা এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানিয়েছি। এটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন যদি কাজ না করে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।' এ বিষয়ে তথ্য দিতে কিছুদিন সময় চান পরিবেশ অধিদপ্তর, পাবনার সহকারী পরিচালক আব্দুল গফুর। তবে পরিদর্শক আব্দুল মমিন বলেন, 'আমরা জেলা প্রশাসকের সমন্বয়ে একটা পদক্ষেপ নিচ্ছি। খুব শিগগিরই একটা এ্যাকশনে যাব।' নিয়মিত অভিযান চলছে জানিয়ে পাবনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের, 'আমাদের লোকবল কম, ১৮ জনের জায়গায় মাত্র ৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট। তারপরও অভিযান চলছে, জরিমানা করা হচ্ছে। অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট যদি একটু মুভ করতো তাহলে ভালো হতো।'