বিকল্প বিদ্যালয় না থাকায় ঝড়ে পড়ার শঙ্কা

মুরাদনগরে ভর্তি বঞ্চিত হয়ে বিপাকে ২৩৩ হতদরিদ্র শিক্ষার্থী

প্রকাশ | ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০

মুরাদনগর (কুমিলস্না) প্রতিনিধি
কুমিলস্নার মুরাদনগরে কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি বঞ্চিত হয়ে বিপাকে পড়েছেন ২৩৩ জন হতদরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থী। ষষ্ট শ্রেণীতে লটারিতে বাদ পড়ে ওই বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেনি ১৯৪জন ছাত্র এবং ৩৯জন ছাত্রী। আশপাশে প্রায় ৩-৪ কিলোমিটার এলাকায় বিকল্প কোন বিদ্যালয় না থাকায় অসহায় পরিবারের শিক্ষার্থীরা ঝড়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে ওই বিদ্যালয়ে শাখা বৃদ্ধি করে এসব শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার জন্য জোড়ালো দাবি উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকার লোকজন সোচ্চার হয়ে উঠেছে। সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়টি ওই এলাকার একটি প্রবীন এবং প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আশপাশের প্রায় ৫০টি গ্রামের ছাত্র ছাত্রীদের ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানই একমাত্র ভরসা। বিদ্যালয় সূত্র জানায়, কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ট শ্রেণীতে ৫টি শাখা রয়েছে। প্রতি শাখায় ৫৫জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। এ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে মোট ২৭৫ আসন রয়েছে। কিন্তু এবার ৫০৮ শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন করেছে। এতে লটারি প্রক্রিয়ায় ২৩৩ জন বাদ পড়ছে। বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশিরভাগই অত্যন্ত হতদরিদ্র এবং অসহায় পরিবারের সন্তান। তারা ইচ্ছা করলেও বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে লেখাপড়া করার মত সক্ষমতা নেই। তাছাড়া আশপাশে বিকল্প কোন উচ্চ বিদ্যালয় নেই। যার ফলে ওই বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ছাড়া তাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় অবিলম্বে ওই বিদ্যালয়ে শাখা এবং আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। স্থানীয় ভিংলাবাড়ী এলাকার অভিভাবক মমিনুল ইসলাম বলেন, '৩-৪ কিলোমিটারের মধ্যে বিকল্প কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। এখন ছেলে মেয়েদের কোথায় ভর্তি করব। অবিলম্বে বদিউল আলম উচ্চ বিদ্যালয়ে শাখা বৃদ্ধির দাবি করছি।' বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি ভিপি শাহ নেওয়াজ বলেন, 'আমাদের এ বিদ্যালয়ে ৫টি শাখা রয়েছে। এতে এলাকার শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। আমরা প্রশাসনের কাছে উদাত্ত আহবান জানাবো এ বিদ্যালয়ে যেন ছাত্রদের জন্য দুটি এবং ছাত্রীদের জন্য দুটি শাখা বৃদ্ধি করা হয়।' বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মফিজুল ইসলাম বলেন, 'শিক্ষক এবং একাডেমিক ভবন সংকটের কারণে আমরা শাখা বৃদ্ধি করতে পারছি না। তাই চাহিদা অনুসারে শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না।' বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে একটি শাখা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। যদিও এখানে আরও চারটি শাখা বাড়ানোর দাবি রয়েছে। কিন্তু ভবন এবং শিক্ষক সংকটের কারণে এর চাইতে বেশি কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।'