পিরোজপুরের নেছারাবাদে নির্মাণাধীন ব্রিজের স্স্নাব -যাযাদি
পিরোজপুরের নেছারাবাদে পূর্ব জলাবাড়ি খালের ওপর নির্মাণাধীন ২২ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি নির্মানাধীন ব্রিজের স্স্নাবের (ছাদ) বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে গার্ডার নির্মাণ কাজ শেষ না করে ছাদ ঢালাই দিয়ে ফেলে রাখার কারণে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এলজিইডি অর্থায়নে ওই ব্রিজ নির্মাণের ঠিকাদার সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজের ছোট ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম। তিনি গত ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছেন। কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা সাব কন্ট্রাক্টর খোকন মিয়ার দাবি 'কে বা কারা সেন্টারিং খুলে ফেলায় ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।' খোকন আরও বলেন, ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম অগ্রিম টাকা তুলে নেওয়ায় কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা এলজিইডির দেওয়া কার্যাদেশ অনুযায়ী ওই ব্রিজ নির্মাণের মেয়াদ ২০২২ সনের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছে।
জানা গেছে, পূর্ব জলাবাড়ি খৃষ্টান পাড়া হতে মাদ্রা বাজার সড়কের ওপর যথাক্রমে ২২ ও ১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয় ধার্য করে ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর মেসার্স ইফতি ইটিসিএল নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় পিরোজপুর এলজিইডি। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর দুইটি ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। কার্যাদেশ পাওয়ার পরে ইফতি ইটিসিএল স্বত্বাধিকারী এলজিইডির অঘোষিত নিয়ন্ত্রক প্রভাবশালী ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতা মিরাজুল ইসলাম খালের দুই পাড়ে ব্রিজের অ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল নির্মাণ করে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ ফেলে রাখেন। কার্যাদেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার প্রায় দুই বছর পরে সাব কন্ট্রাক্টর হিসেবে খোকন মিয়া গত নভেম্বর মাসে ২২ মিটার দৈর্ঘ্যের ব্রিজটির ছাদ ঢালাই দিয়ে অসমাপ্ত অবস্থায় ফেলে রাখেন। গার্ডার নির্মাণ ছাড়াই ছাদ ঢালাই দেওয়ায় ৪-৫ দিনের মধ্যে ব্রিজে ফাটল ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ছাদ ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে নেছারাবাদ এলজিইডির কর্মচারীরা ব্রিজের নিচে খুঁটি গেড়ে ঠেক দিয়ে দুর্ঘটনা এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
ওই খালের পাড়ের জলাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা সুকন্ঠ মজুমদার জানান, ব্রিজ নির্মাণের নামে তিন বছর ধরে খালে বাঁধ নির্মাণ করে তাদের দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে ঠিকাদার। সর্বশেষ ব্রিজের গার্ডার ছাড়া ছাদ ঢালাই দিয়ে চলে যাওয়ায় ৪-৫ দিন পরেই ফাটল দেখা দিলে তারা এলজিইডিকে অবহিত করেন।
জানতে চাইলে সাব কন্ট্রাক্টর পিরোজপুরের খোকন মিয়া বলেন, ঢালাই দিয়ে তারা চলে যাওয়ার পরে কে বা কারা সেন্টারিং খুলে ফেলায় ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঠিকাদার মিরাজুল ইসলাম অগ্রিম টাকা তুলে নেওয়ায় কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।
ওই কাজের দায়িত্বে থাকা উপ সহকারী প্রকৌশলী বিকাশ চন্দ্র বলেন, ঠিকাদার খোকন মিয়া ছাদ ঢালাই দিয়ে চলে যাওয়ায় পরে কাজে সংশ্লিষ্ট লোকজন সেন্টারিং খুলে নিয়ে যাওয়ার কারনে ব্রিজটি ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রায়সুল ইসলাম জানান, পুরো স্স্নাব (ছাদ) ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ কাজ করতে হবে। মূল ঠিকাদারকে পাওয়া না গেলে কাজ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।