রাজশাহীতে ভারতীয় ভিসার নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক দম্পতি
প্রকাশ | ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
রাজশাহী অফিস
রাজশাহীতে ভিসা করে দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক দম্পতি। না বুঝে তাদের ফাঁদে পরে অর্থ খোয়ানোসহ হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকেই। এই দম্পতি ভারতীয় ভিসা অনলাইনে আবেদন ও ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার দোকান খুলে বসেছে খোদ ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার অফিসের গেটেই।
রাজশাহী মহানগরীর বর্ণালী মোড়ে মরিয়ম টাওয়ারে ভারতীয় ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার কার্যালয়। তার গেটেই রয়েছে একটি ঘর। সেখানে লেখা রয়েছে 'রহমান লাইফ সলুশন'। ভিতরে রয়েছে একটি কম্পিউটার, একটি প্রিন্টার, একটি টেবিল ও তিনটি চেয়ার। সেখানে বসে আখতারি সুলতানা জলি ও তার স্বামী আবু সাঈদ রহমান। তাদের অফিসের ভিজিটিং কার্ডে লেখা রয়েছে 'রহমান লাইফ সলুশন'। আর এই প্রতিষ্টানের চেয়াম্যান উলেস্নখ করা হয়েছে আখতারি সুলতানা জলিকে। মুলতঃ ভিসা প্রার্থীদের আবেদন করে দেওয়ার জন্য এ কার্যালয় তৈরী করেছে তারা।
স্থানীয়রা জানায়, আখতারি সুলতানা জলি ভারতীয় ভিসা আবেদন অফিসে চাকরি করতেন। ভিসা প্রার্থীদের নিকট হতে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে চাকরি হারিয়েছে। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে ভিসা অফিসের অফিস গেছে খুলে বসেছে প্রতারণার ফাঁদ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এই দম্পতির ফাঁদে পরে হয়রারিন শিকার হওয়া দুই ভূক্তভোগী গোদাগাড়ী উপজেলার আব্দুল খালেক ও এরশাদ আলী তাদের ঘরের সামনে হইচৈই করছেন। তাদের অভিযোগ, তারা ভারতে চিকিৎসা করার জন্য রাজশাহী ভারতীয় ভিসা অফিসে আবেদন করেন। এই প্রতারক দম্পতি তাদের মোবাইল নং সংগ্রহ করে ভারতীয় ভিসা করে দেওয়া হবে বলে মোবাইল ফোনে জানান। তাদের দুইজনের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্ত চিকিৎসা নেওয়া জরুরী বলে তারা ১৫ হাজার টাকা দফারফা করেন। প্রাথমিক অবস্থায় তারা দুই হাজার টাকা বিকাশে নেন। পরে বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে ডাকলে নগদ ১৩ হাজার টাকা নেন। সোমবার তারা ভিসার অফিসে আসলে তাদের পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হয় এবং জানিয়ে দেয় ভিসা হবে না। এ সময় তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তাদের সেেঙ্গ অশালীন আচরণ করে ওই দম্পতি।
ঘটনাটি গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রম্নত প্রতারক দম্পতি চলে যেতে থাকেন। এ সময় প্রতারক আব্দুর রহমানের সঙ্গে সাংবাদিকরা কথা বলতে গেলে বলেন, 'আপনারা কে। আপনার সঙ্গে কোন কথা নাই, আইনে আছে পুলিশ ডাকেন।' এরপর সেখান থেকে তিনি দ্রম্নত সটকে পড়েন।
পরে খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠান বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদী মাসুদ। এছাড়াও মুঠোফোনে ভূক্তভোগীদের কথা শোনেন ওসি। বিষয়টি শোনের বোয়ালিয়া থানার এসআই হেদায়েত আলীও। তিনি প্রতারক দম্পতির অফিসের কর্মচারী রায়হানের সঙ্গে কথা বলে তাদের তার ঠিকানা জানতে চাইলে দিতে পারেনি। বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই হেদায়েত আলী বলেন, 'আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভূক্তভোগীদের কথা শুনেছি। তাদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগটি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'