ফুলবাড়ীতে আলু চাষ বাড়ছে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

কৃষি বিভাগের সহযোগিতার অভাব

প্রকাশ | ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

ইউসুফ আলী সংগ্রামী, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম)
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সর্বত্রে আলু চাষের উপর কৃষকের আগ্রহ দেখা দিয়েছে। আলু একটি অন্যতম খাদ্যশস্য হওয়ায় আলু চাষের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে এখানকার কৃষকরা। একদিকে আলু থেকে নিজেদের তরকারি চাহিদা মেটানোসহ দেশের আলুর খাটতি মিটাতেই এখানকার কৃষকরা আলু চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় কৃষকদের অভিমত, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আলু চাষের উপর কৃষকদের প্রনোদনা প্রদানের সুযোগসহ চাষ ভিত্তিক পরামর্শ যথাযথ দিলে এখানকার কৃষকেরা আলু চাষের উপর আরও মনোনিবেশ করবেন বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। ফুলবাড়ী উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের মধ্যে সর্বোচ্চ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে। এরমধ্যে এই ইউনিয়নের পূর্ব রামরাম সেন গ্রামের আলুচাষীরা নিজেদের আলু চাষের অভিজ্ঞতা থেকে অন্যান্য বারের মতো এবারও তারা আলু চাষ শুরু করেছেন। এ গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল জানান, আমি ২৭ বছর ধরে এখানে আলু চাষ করে আসছি। আলুর চাষের উপর নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আলু চাষ করে পরিবারের তরকারি চাহিদা মেটানোসহ দেশের মানুষের জন্য আলুর খাটতি পূরণে চেষ্টা করছি। আলু চাষে মুনাফা পাচ্ছি। এবার ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করছি। কৃষক আব্দুল জলিল আরও জানান, আমরা ভুট্টা চাষ না করে আলু চাষ করছি। ভুট্টা মানুষের খাদ্য শস্য নয়। আলু মানুষের অন্যতম খাদ্যশস্য। তাই আমার আলু চাষে আনুপ্রাণিত হয়ে পূর্ব রামরাম সেন গ্রামের জসিম উদ্দিন ২ বিঘা জমিতে, হারুন অর শিদ ১ বিঘা ও হাছেন আলী ১ বিঘা জমিতে আলু চাষ করছেন। কৃষক আব্দুল জলিলের অভিযোগ, আমাদের এ গ্রামে আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শসহ কোনো সহযোগিতা পাচ্ছিনা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে যদি পরামর্শসহ অন্যান্য সহযোগিতা করতো তাহলে এখানে আলুর চাষ আরও বৃদ্ধি পেত। এতে দেশের মানুষের উপকার হতো। কৃষক জসিম উদ্দিন জানান, এবার আমি ২ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। আশা করছি এবার আলুর বাম্পার ফলন পাবো। তার অভিযোগ, আমাদের এখানে সরকারের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা পাওয়া যায়না। আলু চাষাবাদ সম্পর্কে তাদের পরামর্শ পাওয়া গেলে আমাদের উপকার হতো। কিন্তু আমরা তাদের দেখা পাইনা। এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমিন জানান, এবার ফুলবাড়ী উপজেলায় ১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার আলু চাষের জমির পরিমান বেড়েছে প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ হেক্টর জমি। এবার শীতে শৈত্যপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশা না থাকায় আলুর ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে কৃষকরা লাভবান হবে বলে আশা করছি। আলু চাষী কৃষকদের কৃষি অফিসের সহযোগিতার অভাব সম্পর্কে তিনি জানান, আলু চাষের উপর কৃষকের জন্য তেমন সরকারি বরাদ্দ নেই। পাশাপাশি জনবল সংকটে কিছু কিছু জায়গায় কৃষকদের সঙ্গে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা যোগাযোগ রক্ষা করতে পাচ্ছেনা। উপজেলা প্রশাসন থেকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ট্যাগ অফিসারের দায়িত্ব দেয়ায় কৃষকের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের একটি খাত সৃষ্টি হচ্ছে এখানে। তবে কৃষকদের সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের যোগাযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান কৃষি কর্মকর্তা।