শীত প্রায় শেষের পথেই কিন্তু এখনো হাওড়ে আসেনি পরিযায়ী পাখি। বিভিন্ন হাওড় পারের গ্রামবাসীরা জানান, এ বছর আর পরিযায়ী পাখি আসার সম্ভাবনা কম। শুধু এ বছর নয়,বেশ কয়েক বছর ধরে উলেস্নযোগ্য হারে হাওড়ে কমছে পরিযায়ী পাখি আগমন।
অতিথি পাখি কম আসার করাণ হিসেব স্থানীয়রা জানান,হাওড়ে ফাদ পেতে পাখি শিখার, বিষটোপ,হ্যাজাক লাইট দিয়ে রাতের বেলা মাছ নিধন,টর্চ লাইট দিয়ে শিকারীদের পাখি হত্যা,পাখির খাবার কমে যাওয়া, সেই সাথে মেঘালয় সীমান্তে বাংলাদেশ অভিমুখে সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত সার্চ লাইট জ্বালিয়ে রাখা সহ নানা কারনে হাওড়ে কমছে পরিযায়ী পাখির আগমন।
সরজমিন বৃহস্পতিার টাঙ্গুয়া,মাটিয়ান,শনি হাওড় ঘুরে দেশীয় প্রজাতির পাখি বক, পানকৌড়ি, গাঙচিল, মাছরাঙা ব্যাতিত আর কোন পাখির দেখা মিলেনি। বিগত বছর পাচ এক আগেও শীতে শুরুতে প্রচুর পরিযায়ী পাখির দেখা মিলতো হাওড়ে। সুদূর সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া,চীন সহ বিভিন্ন শীত প্রধান দেশ থেকে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি আসতো সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওড়ে। এর মধ্যে টাঙ্গুয়া হাওড়ে সবচেয়ে বেশী পাখির সমাঘম ঘটতো। যে সব পাখির অবাধ বিচরণ ছিলো হাওড়ে তার মধ্যে ছিলো ছোট ডুবুরি, বড় খোপা ডুবুরি, মেটে রাজহাঁস,চখাচখি,ছোট সরালি,বড় সরালি, লেনজা হাঁস, খুনতে হাঁস, পাটারি হাঁস, ফুলুরি হাঁস, গিরিয়া হাঁস, সিঁথি হাঁস, বালি হাঁস, লাল ঝুটি ভুতি হাঁস, পাতি ভুতিহাঁস,মেটেবুক ঝিলি,কায়েম, দলপিপি, কুট, লাল ঢেঙ্গা, মেটেমাথা টিটি, তিলা লালপা, খয়রা মাথা গাঙচিল, কুরা, সহ নানা প্রজাতির পাখি। এসব পরিযায়ী পাখি কখনো জলকেলি, কখনো খুনসুটি কিংবা খাদ্যের সন্ধানে এক হাওড় থেকে অন্য হাওড়ে গলায় স্বর তুলে ঝাঁকে ঝাঁকে আকাশে উড়ে বেড়াতো। কিন্তু এ বছর টাঙ্গুয়া হাওড় সহ কোন হাওড়ে এখনো আসেনি কোনো পরিযায়ী পাখি।
তাহিরপুর সদর রতনশ্রী গ্রামের ভ্রমন প্রেমি সোহানুর রহমন সোহাগ বলেন,টাঙ্গুয়া হাওড়কে রামসার সাইট ঘেষনার পর থেকেই পাখি সহ জীব বৈচিত্র কমছে হাওড়ের।
টাঙ্গুয়া হাওড় নিয়ে কাজ করা বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সিএনআরএস সুনামগঞ্জ ফোকাল পার্সন ইয়াহিয়া সাজ্জাদ বলেন, এ বছর টাঙ্গুয়া হাওরে পরিযায়ী পাখি কম এসছে এটা সবাই জানেন। পাখিদের অবাধ বিচরণ করতে নানা সমস্যার কারেনই পাখি আসা কমেছে বলে তিনি মনে করেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.আবুল হাসেম বলেন, টাঙ্গুয়া হাওড়ে গিয়েছিলাম পাখির ছবি তুলতে গিয়ে দেখি পাখি কম। অতিথি পাখি শিকার আইনত অপরাধ,যারাই এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হচ্ছে।