দায়িত্ব অবহেলা ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

ধুনটে নিম্নমানের কাজ করায় ধসে পড়ল বিদ্যালয়ের ওয়াশ বস্নক

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার ধুনটে নিম্নমানের কাজ করায় একদিনেই ধসে পড়েছে তারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ বস্নক। এ কারণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা ও ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। জানা গেছে, উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের তারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশ বস্নক নির্মাণের জন্য ১৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। ধুনট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধায়নে বগুড়ার নূর আলম নামের এক ঠিকাদার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কিন্তু এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার নিজে কখনো না এসে মাত্র দুই জন মিস্ত্রি দিয়ে বিদ্যালয়ের ওয়াশ বস্নক নির্মাণ করেন। ওয়াশ বস্নকের ছাদ ঢালাই ও গাঁথুনিতে রড ও সিমেন্ট কম দেওয়া, বালুর পরিবর্তে মাটি ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর। তারাকান্দি গ্রামের গোলাম রব্বানী জানান, বৃহস্পতিবার সকালে দুইজন মিস্ত্রী এসে ওয়াশ বস্নকের গাঁথুনি শেষ করে গভীর রাতে মেঝে ঢালাই, বারান্দা ও সিঁড়ি তৈরি করে চলে যায়। পরদিন শুক্রবার সকালে এসে দেখেন ওয়াশ বস্নকের বারান্দা ও সিঁড়ি ধসে গেছে। তিনি দাবি করেন, ঘুষ বাণিজ্যের কারনেই কোন ইঞ্জিনিয়ার কোনদিন কাজ দেখতে আসেননি। একারনে ঠিকাদারের মিস্ত্রী ইচ্ছেমতো নিম্নমানের কাজ করেছেন। তাই এক সময় পুরো ওয়াশ বস্নকটিই ধসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন পিস্টন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব অবহেলা এবং ইঞ্জিনিয়রদের কমিশন বাণিজ্যের কারনে খুবই নিম্নমানের কাজ করা হয়েছে। তাই এলাকাবাসী ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াশ বস্নকটি ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের দাবি এবং এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তবে এবিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় স্কুল ছুটির পর সবাই চলে গেছি। কিন্তু গভীর রাত পর্যন্ত তারা নির্মাণ কাজ করেছেন। একারনে একদিনেই ওয়াশ বস্নকটি ধসে গেছে। তবে নিম্নমানের কাজ করার বিষয়ে শিক্ষা অফিস ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মেলেনি।' উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান বলেন, 'নির্মাণ কাজের সময় আমাদের অফিসার থাকার কথা ছিল। কিন্তু তারা আমাদের না জানিয়ে নির্মাণ কাজ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' তবে ধুনট উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মেহেদুল ইসলাম বলেন, 'আমি গত এক সপ্তাহ যাবত যোগদান করেছি। তাই বিষয়টি জানা নেই। নিম্নমানের কাজ করা হলে সরেজমিন তদন্ত করে ওই ঠিকারদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' ধুনট ইউএনও খ্রিষ্টফার হিমেল রিছিল বলেন, নিম্নমানের কাজ করা হলে এবং কারো দায়িত্ব অবহেলা থাকলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।