অবহেলায় রোগী মৃতু্যর অভিযোগ এনে হাসপাতালে হট্টগোল! চিকিৎসক অবরুদ্ধ

প্রকাশ | ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের চিকিৎসকের অবহেলায় নইমুদ্দিন সরকার নামে এক রোগীর মৃতু্যর অভিযোগ এনে জরুরি বিভাগে হট্টগোল ও চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখে নিহতের স্বজনরা। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। গত রোববার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরী বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে রাত পৌনে ১০টার দিকে ওই ব্যক্তিকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে আনে স্বজনরা। নিহত নইমুদ্দিন সরকার (৬০) শ্রীপুরের কেওয়া পূর্বথন্ড গ্রামের মৃত কেরামত ওরফে কেরু মোলস্নার ছেলে। দায়িত্বরত চিকিৎসক ছিলেন, ওই হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. বিজন মালাকার। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়েন নইমুদ্দিন। এ সময় তাকে দ্রম্নত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক একটি ইনজেকশন দিয়ে অপেক্ষা করতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পর রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে যায়। পরে ডাকাডাকি করলেও ডাক্তার নার্স কেই বের হননি। একপর্যায়ে তিনি মারা যান। পরে চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। বিষয়টি বেগতিক দেখে রোগী অন্যত্র রেফার্ড করে ডাক্তার। পরে লোকজন উত্তেজিত হলে পুলিশ আসে। নিহতের ভাতিজা মোজাম্মেল হক বলেন, 'রোগীর অবস্থা খারাপ হলে রিকোয়েস্ট করেও কাউকে পাইনি। নিজের ব্যর্থতা লুকাতে ইসিজির নাটক সাজান ডাক্তার। দীর্ঘ সময় পর এক বয়কে দিয়ে ইসিজি করান। পরে বলেন, রোগীর হালকা প্রাণ আছে। দ্রম্নত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। চাচা সেখানেই মারা গেছেন। আমরা তার মৃতু্য নিশ্চিত হতে মাওনা চৌরাস্তার পৃথক তিনটি হাসপাতালে নিয়েছি। সেখানের চিকিৎসকরা জানান প্রায় দেড় ঘণ্টা আগেই তার মৃতু্য হয়েছে।' দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ও ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. বিজন মালাকার বলেন, 'ওই রোগীকে অসুস্থ অবস্থায় রাত পৌনে ১০টার দিকে আনা হয়। কাশির ওষুধে অন্য কিছু মিশিয়ে মাত্রারিক্ত খেয়েছিল। তার বুকে জ্বালা হচ্ছিল। তাকে গ্যাস্টিক ইনজেকশনসহ প্রাথমিক চিকিৎসা দেই। আমাদের না জানিয়ে রোগীর লোকজন তাকে বাহিরে কোথায় নিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতালে এসে ডাক চিৎকার শুরু করে। তার অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করি।' উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, 'ওই রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয়েছিল। কিন্তু স্বজনরা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। দায়িত্ব অবহেলার কোনো ঘটনা ঘটেনি।' শ্রীপুর থানার ওসি জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, চিকিৎসক অবরুদ্ধ রাখার খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। সবার সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কারো কোনো অভিযোগ থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।