ইউরোপে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের ‘জলডুগি’

‘বিষমুক্ত আনারস বেচাকেনায় ব্যাপক প্রচারণা দরকার। এতে কৃষকরা রাসায়নিক মুক্ত আনারস চাষে উৎসাহিত হবে’

প্রকাশ | ২৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

মু. জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইলের মধুপুরের আনারস হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় Ñযাযাদি
দেশে ‘জায়ান্ট কিউ’ ও ‘হানি কুইন’ জাতের আনারস চাষ হয়। এর মধ্যে ‘জায়ান্ট কিউ’ জাতটি শুধু টাঙ্গাইলেই উৎপাদন হয়। এই জাতটি ‘জলডুগি’ নামেও পরিচিত। দু-তিন বছর আগে আমাদেও দেশে আসা ইউরোপের একটি দল জলডুগি আনারস খেয়ে খুব প্রশংসা করেন এবং সাথে করে আনারস নিয়ে যান। তারপর থেকে প্রতি মৌসুমেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইউরোপে আনারস রপ্তানি হচ্ছে। সরেজমিনে আনারসের রাজধানী মধপুর বনাঞ্চলের আলোকদিয়া, আউসনারা, দিগর বাইদ, অরনখোলা, জলছত্র, মোটের বাজার, গারোবাজার, রসুলপুর, পঁচিশমাইল, ইদিলপুরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে আনারসের জমিতে কৃষকদের কমর্ ব্যস্ততা। তারা এখন ফল কাটতে ব্যস্ত। মধুপুরের আনারস স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় ঢাকা, কুমিল্লা, পাবনা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আনারস কেনার জন্য বেপারিরা ভিড় জমাচ্ছেন মধুপুরের পঁচিশমাইল জলছত্র বাজারে। জানা গেছে, মধুপুর জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি আসেন। হাঙ্গেরি, ডেনমাকর্, ইউরোপ বা আমেরিকা থেকে। তাদের আনারস খেতে দেয়া হয়। কিছু দিন আগেও ইংল্যান্ড থেকে একটি দল এসেছিল। তারাও আনারস খেয়ে প্রশংসা করেছেন। দু-তিন বছর আগে ইউরোপের একটি দল আনারস খেয়ে খুব প্রশংসা করেন এবং সাথে করে আনারস নিয়ে যান। তারপর থেকে প্রতি মৌসুমেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইউরোপে আনারস যায়। জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক বলেন, মধুপুরে আদিবাসীদের মধ্যেও বিষমুক্ত আনারস চাষির সংখ্যা বাড়ছে। তারা নিজেদের খাবারের পাশাপাশি বিক্রির জন্য বিষমুক্ত আনারস চাষ করছেন। বিষমুক্ত আনারস বেচাকেনায় ব্যাপক প্রচারণা দরকার। এতে কৃষকরা রাসায়নিকমুক্ত আনারস চাষে উৎসাহিত হবে। মধুপুর উপজেলা নিবার্হী কমর্কতার্ মুক্কাদির আজিজ জানান, আনারসে মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগ না করার জন্য ব্যাপক প্রচারণা এবং কৃষি সমাবেশ করা হয়েছে। আনারসে ওষুধ প্রয়োগের বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, আনারসের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে এই বিষাক্ত ওষুধ বা ফরমালিন প্রয়োগ করা হয়। তবে পরিমাণ মতো ওষুধ প্রয়োগ করলে মানব দেহের কোন ক্ষতি হবে না। মাত্রাতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগ না করার জন্য তারা মাঠ পযাের্য় কাজ করছেন। তিনি জানান, এ বছর নয় হাজার হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। আর এর উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ধরা হয়েছে দুই লাখ ৩৪ হাজার টন।