আখাউড়ায় রেলওয়ে সরকারি স্কুল

৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা

প্রকাশ | ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
বলা হয় শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আর জাতির মেরুদন্ড গঠনে পাঠদানে গরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন শিক্ষকরা। শিক্ষককে মানুষ গড়ার 'কারিগর' বলেও সম্মান দেওয়া হয়। জাতি গঠনের সেই কারিগর তথা শিক্ষকরা যখন মাসের পর মাস প্রাপ্য বেতনটুকু পান না তারচেয়ে দুঃখজনক আর কি হতে পারে। জাতির মেরুদন্ড গঠনে গুরু দায়িত্ব পালন করা শিক্ষকদের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সবচেয়ে জরুরী। গত ৫-৬ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার প্রাচীণ বিদ্যাপীঠ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২জন শিক্ষক-কর্মচারী। 'বাজেট বরাদ্দ' না থাকায় বেতন দিতে পারছে না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকদের আয়ের প্রধান উৎস বেতন-ভাতা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় অর্থ কষ্টে ভুগছেন জাতির কারিগর শিক্ষকরা। ঘর ভাড়া, সাংসারিক খরচ মেটানোসহ সন্তানদের পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এভাবে বেতন ভাতা বন্ধ থাকলে সামনের দিনগুলো কীভাবে চালাবেন এই দুশ্চিন্তায় ভুগছেন শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে সরকারি রেলওয়ে স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতনের ফান্ড দেওয়া বন্ধ রয়েছে। রেল ভবনের কাছে রেলওয়ে স্কুল যে 'সরকারি স্কুল' তার স্বপক্ষে কাগজপত্র চায় নতুন সরকারের অর্থ বিভাগ। এ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। অর্থ ছাড় না হওয়ায় মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না শিক্ষক-কর্মচারীরা। কবে নাগাদ বেতন পাওয়া যাবে তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। জানা গেছে, ১৯২০ সালে আখাউড়া রেলওয়ে স্কুল প্রতিষ্ঠিত। স্কুলটি পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এ স্কুলে বর্তমানে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সহস্রাধিক ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বিদ্যালয়ের ১২ জন শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের বেতন বন্ধ ৪ মাস, সিনিয়র শিক্ষক মুহম্মদ হাবিবুর রশিদ ৫ মাস, রাজু আহমেদ মামুন ৫ মাস, নৈশ প্রহরী আব্দুস সালাম ৭ মাস। অন্যদেরও ১ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত বেতন বন্ধ। সিনিয়র শিক্ষক মুহম্মদ হাবিবুর রশীদ বলেন, '৫ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। এক ছেলে এক মেয়ে ঢাকায় পড়ালেখা করে। তাদের খরচ চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে।' জানতে চাইলে রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, 'রেল মন্ত্রণালয়ের কাছে রেলওয়ে স্কুল যে সরকারি এর স্বপক্ষে কাগজপত্র চেয়েছে নতুন সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা যোগাযোগ রাখছি। আশা করি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।' জানতে চাইলে একাউন্ট্যান্ট (সংস্থাপন) চট্টগ্রাম সিআরবি নাম প্রকাশ না করে বলেন, 'শিক্ষকদের কষ্ট দেখে আমারও কষ্ট হয়। গত বাজেট মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আশা করি আগামী বাজেটে শিক্ষকদের জন্য আলাদা বরাদ্দ পাওয়া যাবে।'