অবৈধ বালু উত্তোলন কুশিয়ারায় তীব্র ভাঙন

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি
নবীগঞ্জে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। অব্যাহত এই বালু উত্তোলনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ। নদ নদী থেকে অপরিকল্পিত-অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) বলেছে তারা বিষযটি খতিয়ে দেখবেন। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রম্নয়ারি) ১১ জন অবৈধ বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় মামলা হয়েছে। নবীগঞ্জ থানায় এর আগে মামলা ও জরিমানা হলেও কুশিয়ারা নদীতে বন্ধ হচ্ছে না অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন। গত কয়েক বছর ধরে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের কারণেই কুশিয়ারা নদীর ভাঙন বন্ধ হয়নি। অভিযোগ আছে- একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও স্থানীয়রা বিরোধিতা করলেও তাদের তৎপরতা বন্ধ করা যায়নি। এ কারণে নদীভাঙন রোধে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেও কোনো সুফল আসছে না। এদিকে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড.ফরিদুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসন কুশিয়ারা নদীর বালু তোলা কোন অনুমোদন দেয়নি। প্রতিদিনই ২০/২৫টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর বালু উত্তোলনে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করায় প্রতিবছরই নদীভাঙনের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এমনকি ব্যক্তিস্বার্থে এ বালু উত্তোলনে সরকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। তাই অবৈধ এ বালু উত্তোলন বন্ধে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের নিকট দ্রম্নত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি তোলেছেন এলাকাবাসী। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী বিভিন্ন নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে, অবাধে ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। আমরা বিষয়টি জেনেছি ফলে অবৈধ বালু উত্তোলন রোধে বেলার বিভিন্ন কার্যক্রম রয়েছে, নবীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর বিষয়টি দেখা হচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়টি বেলার অনুসন্ধানী দল সরেজমিন পরিদর্শন করে ঘটনার 'সত্যতা খুঁজে পায়' তখন ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও হবিগঞ্জ বাপার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, 'অপরিকল্পিত ও অননুমোদিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নদীগুলোর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে, নদীর দুই পাড় ভেঙে পড়ছে। এতে নদীর পাড় সংলগ্ন কৃষিজমি, বাঁশঝাড়, গাছগাছালি, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবহারে রাস্তাঘাট নষ্ট হচ্ছে এবং কালো ধুয়া ও তীব্র শব্দের কারনে বায়ু দূষন হচ্ছে। বিআইডবিস্নউটিএর উপ-পরিচালক আবু সালেহ কাইয়ুম বলেন, বালু তোলার জন্য আমরা একটি এন্টারপ্রাইজকে শুধু অনুমতি দিয়েছি। তারা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিবেন। তবে বালু উত্তেলনকারীরা জেলা প্রশাসকের কোন অনুমতির কাগজ দেখাতে পারেন নি। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন কে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।