মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চোরাকারবারি দুই গ্রম্নপের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে অটোরিকশাচালক খুন ও মেহেরপুরের গাংনীতে আহত গৃহবধুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু্য হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চোরাকারবারি দুই গ্রম্নপের সংঘর্ষে জাবেল মিয়া (২৬) নামের এক যুবকের মৃতু্য হয়েছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নিশ্চিন্তপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত জাবেল দত্তগ্রামের রহমত উলস্নাহর ছেলে।
জানা যায়, উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী নিশ্চিন্তপুর এলাকার কয়েকটি স্পট দিয়ে ভারত থেকে চোরাই মালামাল পরিবহন করা হতো। এ নিয়ে কিছুদিন থেকে স্থানীয় বাসিন্দা জাবের মিয়ার গ্রম্নপের সঙ্গে শামীম মিয়ার গ্রম্নপের মতবিরোধ চলছিল। সম্প্রতি শামীমের গ্রম্নপের শ্রমিক জাবেল মিয়াকে মারধর করে জাবের গ্রম্নপের কয়েকজন। এনিয়ে দুই গ্রম্নপের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পূর্বের বিরোধ মিটমাট করর লক্ষ্যে শনিবার সন্ধ্যায় দুই গ্রম্নপের লোকজনকে নিয়ে নিশ্চিন্তপুরের একটি বাড়িতে বৈঠকে বসা হয়। একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটি করতে গিয়ে দুইপক্ষ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই জাবেল মারা যান। এসময় শামীম মিয়া, আক্তার মিয়া, সিপন মিয়াসহ দুই গ্রম্নপের আরও ৫-৬ জন আহত হয়েছেন।
কুলাউড়া থানার ওসি গোলাম আপছার জানান, প্রাথমিক তথ্যে পাওয়া গেছে- চোরাকারবারিদের দুই গ্রম্নপের দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। নিহত জাবেলের মাথার পেছনে ধারালো অস্ত্রের আঘাত দেখা গেছে। রাতেই অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে জাহিদুল ইসলাম (২০) নামে এক যুবকের মৃতু্য হয়েছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার সরল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড বেড়িবাঁধ সংলগ্ন কানুনগোখীল সরল ব্রিজের পূর্ব পাশে এ ঘটনা ঘটে। নিহত অটোরিকশাচালক জাহিদুল ইসলাম বাঁশখালী পৌরসভা ১নং ওয়ার্ড ভাদালিয়া গ্রামের বাচুর বাপের বাড়ির মৃত হাবিব উলস্নাহ পুত্র।
জানা যায়, জাহিদুল কয়েক বছর ধরে অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তারাবির নামাজের পর স্থানীয় কয়েকজন পথচারী জাহিদুল ইসলামকে রাস্তায় অর্ধ-মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স নিয়ে আসেন। এরপর চিকিৎসক জাহিদুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এ ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের বিশেষ একটি টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম।
গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরের গাংনীর বেতবাড়িয়া গ্রামে পারিবারিক কলহের জের ধরে ছেলের শশুরবাড়ির লোকজনের হামলায় আহত গৃহবধু মাহফুজা খাতুনের মৃতু্য ঘটেছে। শনিবার রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। গৃহবধূ মাহফুজা খাতুন ওই গ্রামের আব্দুর রশীদের স্ত্রী।
জানা গেছে, বছর চারেক আগে আব্দুর রশীদের ছেলে সোহেল রানার বিয়ে হয় প্রতিবেশী শওকত আলীর মেয়ে পিংকীর সঙ্গে। পিংকী প্রতিবন্ধী হওয়ায় সোহেল রানা ও তার পরিবারের লোকজনের মাঝে মনোমালিন্য চলে আসছিল। গত বৃহষ্পতিবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রশীদ ও শওকত আলীর পরিবারের মধ্যে কয়েক দফা কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় শওকত আলীর পরিবারের লোকজন রশীদের বাড়িতে হামলা চালায়। এতে আহত হন মাহফুজা খাতুন ও তার স্বামী রশীদ। স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়ার পর মাহফুজাকে প্রেরণ করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাতে তার মৃতু্য হয়।
এদিকে মাহফুজা হত্যকান্ডের অভিযোগ তুলে গাংনী থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন তার ছেলে রাসেল। মামলার ৩নং আসামি আসাদ মোলস্না (৪৫) ও ১৬ নং আসামি জালাল মোলস্না ওরফে ঝাড়ুকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।