ভবদহ অঞ্চলে প্রদীপের 'শেওলা কাটা মেশিন'

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
'প্রয়োজনীয়তাই উদ্ভাবনের জনক'। এই প্রবাদকে সামনে রেখে শেওলা কাটা (কচুরিপানা) মেশিন উদ্ভাবন করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন প্রদীপ বিশ্বাস। প্রদীপ যশোরের মণিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কুচলিয়া গ্রামের মৃত প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের ছোট ছেলে। জলাবদ্ধ ভবদহ অঞ্চলের কচুরিপানা সমস্যার সমাধান খুঁজতে গিয়েই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেন প্রদীপ। ইতোমধ্যে তার তৈরীকৃত মেশিন গোপালগঞ্জ পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কিনে নিয়ে গেছে। এছাড়া দেশের নানা প্রান্ত হতে যোগাযোগ করে মেশিন ভাড়া, ক্রয় ও তৈরীর অর্ডার পাচ্ছেন। মণিরামপুর উপজেলা সদর হতে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে সুন্দলী বাজারে প্রদীপ বিশ্বাস নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান 'কুচলিয়া পিকেবি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস'। উদ্ভাবক প্রদীপ বিশ্বাসের বাবা মৃত প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাস ছিলেন অভয়নগর উপজেলার একটি জুট মিলের নামকরা মেকানিক। তার মেধার কারণে পন্ডিত নামেই বেশি পরিচিতি ছিলেন। বাবার হাত ধরেই এই পথে আসেন প্রদীপের। পড়ালেখার গন্ডি বেশি দূর আগায়নি। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন বাবা প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের হাত ধরে এই মেকানিক লাইনে এসেছেন। মেশিনের উদ্ভাবক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ভবদহের প্রভাবে এ অঞলের নদী-খালগুলোতে পলি জমায় নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় খাল-বিল ও নদীতে প্রচুর শেওলা জন্মেছে। যা সারা বছরই থাকে। এতে করে খাল-বিল ও নদীতে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। মূলত: এই শেওলা থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করার চিন্তার মধ্যে দিয়ে তিনি মেশিন আবিষ্কারে নেমে পড়েন। তিনি আরও জানান, দুই বছর আগে ২২ হর্স-পাওয়ারের ইঞ্জিন, এ্যাঙ্গেল, পাত, কাঠ, চেইন, পেনিয়াম, গিয়ারবক্স, পেস্ননসিড ও ১৯টি বিচালি কাটা ছুরি দিয়ে মেশিন বানালেও ঘন শেওলা কাটতে গেলেই মেশিন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ডিঙ্গি নৌকা চালাতে ১১ হর্সপাওয়ার ও শেওলা কাটতে ২২ হর্সপাওয়ারের পৃথক দুইটি ইঞ্জিনহ ৯টি ছুরি পাতের মধ্যে বিশেষ কায়দায় সেট করে মেশিনটি বানানো হয়। প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষে মাস খানেক কাজ করে তৈরীকৃত মেশিন শেওলা কাটার উপযোগী হয়।