রমজানের শুরুতেই জমে উঠছে ঈদের বাজার

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
ঈদুল ফিতরের এখনো বাকি ২২ দিন। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। মূলত ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই অনেকে ঈদের কেনাকাটা করে ফেলছেন। তাই রমজানের শুরুতেই ঈদের বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর- ফরিদপুর প্রতিনিধি জানান, এবার রোজার শুরুতেই চোখে পড়ার মতো ভিড় দেখা গেছে শহরের বিভিন্ন বিপনী বিতানগুলোতে। যারা ঈদে পরিবারের সদস্যদের কেনা কাটার ঝামেলা এড়িয়ে স্বস্তিতে থাকতে চান তারা রমজানের শুরুতেই সেই কাজটি সারতে বিপনী বিতানগুলোতে ভিড় করছেন। শহরের বিভিন্ন বিপনী বিতানগুলোতে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন নিম্নবিত্ত মানুষের সরব উপস্থিতি। শহরের পোশাক ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে রমজানের শুরুতেই হরেক রকম ডিজাইনের শিশু থেকে শুরু করে বয়স্কদের জন্য নানা পোশাক কালেকশন করেছেন। করেছেন বিভিন্ন প্রকারের পাঞ্জাবিও। ফরিদপুর শহরের নিউ মার্কেট, চকবাজার, হাজী শরিয়াতুলস্নাহ বাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটগুলোতে ক্রেতা সাধারণও পরিবারের সব থেকে ছোট সদস্যকে নিয়ে দোকানে দোকানে ঘুরছেন পছন্দের পোশাকটি ক্রয় করতে। ব্যবসায়ীরা জানালেন, গত দুই ঈদ বাজারের তুলনায় এবারে হয়তো ভালো ব্যবসা হবে। তারা যে পণ্যগুলো নিয়ে হাজির হয়েছেন তা ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে। চকবাজার কাপুড় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা সাদ্দাম হোসেন জনি বলেন, এবছর রোজার শুরুতেই ব্যবসা জমতে শুরু করেছে। বিভিন্ন প্রকারের ক্রেতাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষেরা কেনাকাটা বেশ করছেন। শনিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ উপলক্ষে এসব মার্কেটে বেচাকেনা চলছে পুরোদমে। কেনাকাটা পুরুষেন পাশাপাশি নারীরাও নেই পিছিয়ে। তাছাড়া নিত্যনতুন ডিজাইনের মালামাল চলে আসায় তাতে কাস্টমারদের চাহিদা বাড়ছে। নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ী বনি হোসেনসহ মার্কেটের দোকানিরা জানান, বেচাকেনার শীর্ষে রয়েছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, লুঙ্গি, শার্ট-প্যান্ট; মেয়েদের শাড়ি, চুড়ি থ্রি-পিস; বাচ্চাদের পোশাক ইত্যাদি। তবে এবার রমজানে শুরুর দিক থেকেই প্রায় সব দোকানে বেচাকেনা ভালো। বিপস্নব সরকার নামে এক দোকানি জানান, অন্যান্য বছর থেকে এ বছর বেচাকেনা ভালো। তবে নিম্নবিত্তদের বেশিরভাগের ভরসা ফুটপাত। কেননা ফুটপাতে যে পণ্যটি তিন থেকে চারশো টাকার মধ্যে পাওয়া যায়, অভিজাত মার্কেটে এর দাম অনেক বেশি। এদিকে শহরের আদর্শ মার্কেট ও নিউ মার্কেটের সামনে বিভিন্ন ভাসমান দোকান এবং গোয়ালচামটের বাইতুল মোকাদ্দেম মার্কেট, জনতা ব্যাংকের মোড়ে অস্থায়ী কিছু দোকান ও আশপাশের দোকানগুলোয় ভালো বেচাকেনা হতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি শহরের মোবাইল ফোনের দোকানগুলোয়ও বেচাকেনা তুলনামূলক ভালো হচ্ছে। এই সুযোগে বিক্রেতারা বেশ কিছু মোবাইলে ছাড়ের অফার দিয়েছেন। অন্যদিকে শহরে জুতার দোকানগুলোয় বেচাকেনা বাড়ছে। ফরিদপুর শহরতলি থেকে আসা এক ক্রেতা জানান, বাজারের পণ্যের সময় বেশ, কিন্তু তুলনামূলক দাম বেড়েছে। রমজানের শুরুতেই কেনাকাটা করতে আসার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'দিন যত যাবে মার্কেটে ভিড় তত বাড়বে, এর বাইরেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধাজনক নেই, আর এ কারণেই কেনাকাটা আগেভাগে শেষ করতে চাইছি।' এবারের ঈদের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের কেনাকাটার নিরাপত্তার নিশ্চিত করার প্রসঙ্গে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা বলেন, 'আমরা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক শহরে যতগুলো বিপনী বিতান রয়েছে সব জায়গাতেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। সাদা পোশাকে আমাদের গোয়েন্দা ব্যবস্থা সকল বাজারগুলোতেই জোরদার করা হয়েছে। সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি জানান, রোজার সপ্তাহ পার না হতেই নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঈদ উপলক্ষে নতুন কাপড়-চোপড়, স্যান্ডেল-জুতা কিনতে ক্রেতারা দোকানে-দোকানে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। এ জন্যে শহরের কাপড়-চোপড়, জুতা-স্যান্ডেল, কসমেটিক্সের শো-রুমগুলো নতুনরুপে সাজানো হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে মানুষজন একটু চিন্তিত থাকলেও তা রোজা শুরু হতেই মানুষজনের মাঝে সেসব নিয়ে কোনো ভাবনা তেমন নেই। রোজার শুরুতে মনে হয়েছিলো এবার তেমন কেনাবেচা হবে না। কিন্তু তা আর পরিলক্ষিত হচ্ছে না। রোজায় সপ্তাহ যেতে না যেতেই মানুষজন ঈদের কেনাকাটা করতে দিনে-রাতে বাজারের শো-রুমগুলোতে, রেলওয়ে বাজারে ও পস্নাজা মার্কেটের কাপড়-চোপড়, স্যান্ডেল-জুতা ও কসমেটিক্সের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। লক্ষ্য করা গেছে, দিনের বেলা দুপুর থেকে ইফতারির আগ পর্যন্ত ও সন্ধ্যার পর গভীর রাত পর্যন্ত দোকান ও শো-রুমগুলোতে নারী-পুরুষরা কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। কথা হলে, বেশ কয়েকজন ক্রেতা জানান, আর কয়েকদিনের মধ্যে কেনাকাটায় মানুষজনের ভিড় বেড়ে যাবে। তাই, একটু আগেভাগে কেনাকাটা করে নিচ্ছেন। দাম নিয়ে কেউ বেশি বা আগের মতো বলে জানান। শো-রুম ও দোকান মালিক ও কর্মচারীরা জানান, কেনাকাটা ভালোই হচ্ছে। দামো সাধ্যের মধ্যে রয়েছে। আর প্রতিটি শো-রুম ও দোকানে আধুনিক রুচি-সম্মত কাপড়-চোপড়ের কালেকশনও মজুদ করা হয়েছে। স্যান্ডেল-জুতার দোকানগুলোতেও নতুন-নতুন বাহারি কালেকশনের সমাহার রয়েছে বলে স্যান্ডেল-জুতার দোকানের মালিকরা জানান।