বাল্যবিবাহে এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ, বিশ্বে অষ্টম

ইউনিসেফের যৌথ প্রতিবেদনে তথ্য

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দেশে নারীদের উন্নয়নে এখন পর্যন্ত উলেস্নখযোগ্য অনেক কাজ হলেও বাল্যবিবাহের হার কমেনি। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিবাহ হয়, এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। আর এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ইউনিসেফ, ইউএন উইমেন এবং পস্ন্যান ইন্টারন্যাশনালের একটি যৌথ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। 'গার্লস গোলস: হোয়াট হ্যাজ চেঞ্জড ফর গার্লস? অ্যাডলসেন্ট গার্লস রাইটস ওভার ৩০ ইয়ার্স' শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৪ শতাংশেরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগে। '১৯৯৯ বেইজিং ঘোষণা'য় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নারীদের সার্বিক উন্নয়নে যেসব অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি লক্ষ্যের অর্ধেকও পূরণ করতে পারেনি কোনো দেশ। এদিকে ২০৩০ জাতিসংঘের টেকসই অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য আর মাত্র পাঁচ বছর বাকি থাকায় এ ক্ষেত্রে নতুন করে গুরুত্ব আরোপ করার আহ্বান জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয় বিশ্বের অনেক দেশ তাদের কিশোরী মেয়েদের বিকাশের জন্য বিনিয়োগ করে শুধু ব্যক্তিগত বা পারিবারিক পর্যায়েই নয় দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতায় এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ব্যাপক সুফল লাভ করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। কেননা এখানে প্রতিনিয়তই নানা বৈষম্য, সহিংসতা, বাল্যবিবাহ, শিক্ষার সুযোগের ঘাটতি এবং সুযোগ স্বল্পতার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে কিশোরীদের। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সন্তান জন্ম দিচ্ছেন ২৪ শতাংশ নারী। তা ছাড়া বিগত ১২ মাসে সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী কিশোরীদের ২৮ শতাংশ। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী বিবাহিত কিশোরীদের মধ্যে মাত্র ৪৭ শতাংশ নিজেদের প্রজননস্বাস্থ্য বিষয়ে জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও বৈশ্বিকভাবে ১৫ বছর বয়সী কিশোরীদের প্রত্যাশিত আয়ুষ্কাল বেড়ে ৭৯ দশমিক ১ বছর হয়েছে (গত ২৫ বছরে সাড়ে ৪ বছর বেড়েছে)। নারীদের স্বাস্থ্যসেবায় অগ্রগতি হলেও ডিজিটাল দক্ষতার দিক দিয়ে উদ্বেগজনকভাবে পিছিয়ে আছে দেশের কিশোরী ও তরুণীরা। বিশ্বে যে সাতটি দেশে নারীদের ডিজিটাল দক্ষতার হার ২ শতাংশ বা তার চেয়ে কম, সেসব দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া সম্পন্ন করতে পারে ৫৯ দশমিক ২২ শতাংশ কন্যাশিশু। তাই প্রতিবেদনে কিশোরী মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে ২০৩০ এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে সরকার ও অংশীজনদের উলেস্নখযোগ্য প্রচেষ্টা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।