হারিয়ে যাচ্ছে কাঠশালিক

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

আব্দুলস্নাহ হেল বাকী, ধামইরহাট
কাঠশালিক -ফাইল ছবি
অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা বাংলার রূপ আমাদের মুগ্ধ করলেও এ সৌন্দর্যের একটা বিশাল অংশজুড়ে রয়েছে নানা প্রজাতির পাখি। কিন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যাচ্ছে অনেক পাখি। অবাধ বৃক্ষনিধন জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ ও শিকারিদের দৌরাত্ম্যে গ্রামবাংলার চিরচেনা শত শত পাখির অস্তিত্ব আজ বিলুপ্তির পথে। কাঠশালিক এ রকমই একটি পাখি। এক সময় গ্রামগঞ্জে এ পাখিটির অবাধ বিচরণ থাকলেও তা এখন আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। অতিচেনা শালিকদের মধ্যে কাঠশালিক অন্যতম। লালচে ধূসর খয়েরি ও পিঙ্গল বর্ণের মিশেলের এ পাখি আমাদের চেনা শালিকদের চেয়ে একটু ছোট। এরা ১৮ থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। কাঠশালিকের বুক পেট ও লম্বা লেজের পালকের রঙ উজ্জ্বল বাদামি। এদের উজ্জ্বল বড় বড় চোখ ও পা লালচে বর্ণের হয়ে থাকে। এদের গলায় মালার মতো অতিরিক্ত ধূসর পালক রয়েছে। এরা গাছের কোটরে গর্ত করে বাসা বাঁধে। বসন্ত থেকে বর্ষাকাল পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। এ সময় বাসায় তিন থেকে চারটে লম্বাটে নীলচে রঙের ডিম পাড়ে কাঠশালিক। সুন্দর এ পাখিটির সংখ্যা প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। আগে সর্বত্র এদের দেখা গেলেও এখন দুর্গম বনাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকা ছাড়া এদের আর চোখে পড়ে না। এক সময় ধামইরহাট উপজেলার পাখির ব্যবসা থাকলেও এখন মফস্বলে এদের বিচরণ পরিলক্ষিত হয় না। উত্তর চকরহমত গ্রামের কৃষি শিক্ষক আলাল হোসেন বলেন, সুন্দর সুন্দর পাখি হারিয়ে যাওয়ার কারণ হচ্ছে অবাধে বৃক্ষনিধন এবং বনাঞ্চাল ধ্বংস। এক সময় গ্রামাঞ্চলের মানুষ আখ, ধান, গম ও সরষে ক্ষেতে ঝাঁকে ঝাঁকে কাঠশালিক পাখি দেখতে পেত। এখন তা আর চোখে পড়ে না। কাঠশালিক পাখির খাদ্য তালিকায় রয়েছে শস্যদানা পোকামাকড় ও ফল। ধামইরহাট উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ সুন্দর পাখি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। এ জন্য পরিবেশবিদদের পাশাপাশি সবাইকে এগিয়ে আশা দরকার।