বেতাগীতে চিকিৎসক শূন্যতায় স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আন্তঃবিভাগ
প্রকাশ | ১১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার বেতাগীতে চিকিৎসক শুন্যতায় বন্ধ করা হয়েছে স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের আন্ত:বিভাগ। স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসক শূণ্য হওয়ায় গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেবা কার্যক্রম সীমিত করার পর কোন মতে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম চললেও বৃহাস্পতিবার বিকাল থেকে ৩ দিন ধরে আন্ত:বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে রোগীরা।
জানা গেছে, চিকিৎসক সংকটে পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে সেবা কার্যক্রম সীমিত করে উপজেলাস্বাস্থ্য কমপেস্নক্স থেকে গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের দেওয়ালের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাটিয়ে দেওয়া হয়েছে এই গণবিজ্ঞপ্তি। এতে উলেস্নখ করা হয়েছে- 'অনিবার্যবশত ডাক্তার না থাকার কারনে আন্ত:বিভাগে ভর্তিসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ আছে। জরুরি বিভাগে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং বর্হিবিভাগে সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত সেবা কার্যক্রম চালু থাকবে। আশাকরি এ অবস্থা সাময়িক, অবস্থার উত্তরন হলেই পুর্ণনিয়মে সেবা চালু হবে।'
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ২৮ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে চিকিৎসক বলতে বর্তমানে কর্মরত রয়েছে মাত্র একজন ডেন্টাল সার্জন। এখানে গাইনি ও প্রসূতি, শিশু, চর্ম ও যৌনসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ১০টি পদ খালি। শূণ্য রয়েছে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ও প্যাথলজি বিশেষজ্ঞের পদ। নেই ডেন্টালের চিকিৎসা সরঞ্জাম। স্বাস্থ্য সহকারী ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকসহ ১৪ জন মাঠকর্মীরও পদও শূণ্য।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স সূত্রে আরও জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর স্যার সলিমুলস্নাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঢাকা থেকে মেডিকেল অফিসার ডা. তারিনা খান, ওই বছরের ১৮ ডিসেম্বর প্যাথলোজিস্ট হিসাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা থেকে ডা. মানা শায়ন্তা ঘোষকে পদায়ন করা হয়। বছরের ২৭ ফেব্রম্নয়ারি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে আরএমও ডা. মনিরুজ্জামান ও সহকারি সার্জন ডা. রাবীন্দ্র নাথ সরকারসহ বিভিন্ন সময় বেতাগী উপজেলাস্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে বদলী করা হয়। তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স থেকে ডা. আইরিন আলম, ডা. মাহফুজা আক্তার ও আবু সালেহ ইদ্রিসকে নতুন করে ৬ ফেব্রম্নয়ারি পদায়ন করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে আন্ত:বিভাগের সেবা কার্যক্রম বন্ধ, রোগী না থাকায় পড়ে রয়েছে শূণ্য বেড। জরুরি বিভাগে বাহির থেকে উদ্ধার করা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের চিকিৎসক ও একজন বিডিএস দিয়ে কোনমতে স্বাস্থ্যসেবা চলছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসকের অভাবে মেডিকেল অফিসারের পরিবর্তে রোগীদের সামলাচ্ছেন একজন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। তিনি বলেন, চিকিৎসক না থাকায় প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত থাকি। এতে খুব কষ্ট হয়। উপজেলার করুনা গ্রামের আতাহার হোসেন বলেন, 'সম্প্রতি আমার স্ত্রীকে এই হাসপাতালে নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের অভাবে তাকে চিকিৎসা করাতে পারিনি। অবশেষে বরিশালে গিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয়েছে, যা ব্যয়সাধ্য ছিল।'
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়ি্যদ মুহাম্মদ আমরুলস্নাহ বলেন, পদায়নকৃত চিকিৎসকরা যোগদান করলে আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে আন্ত:বিভাগ চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিমাসেই শূণ্যপদের চাহিদা পূরণে উর্ধতন কর্তপক্ষের কাছে চাহিদা পত্র পাঠানো হয়।