রাজবাড়ী রেলওয়েতে লোকবলের সংকট

প্রকাশ | ২০ জুন ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, রাজবাড়ী
রাজবাড়ী রেলওয়েতে লোকবলের চরম সংকট বিরাজ করছে। গোয়ালন্দ ঘাট-পোড়াদহ রেলপথের রাজবাড়ী অংশে নয়টি স্টেশনের মধ্যে চারটি স্টেশন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। পুনঃচালু হওয়া রাজবাড়ী-ফরিদপুর ও কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথের ১৯টি স্টেশনের মধ্যে স্টেশন মাস্টার আছে মাত্র ছয়টিতে। অন্যান্য সেকশনেও লোকবলের চরম সংকট রয়েছে। এতে করে সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাজবাড়ী রেলওয়ে সূত্র জানায়, ঐতিহ্যগতভাবেই রাজবাড়ী রেলের শহর হিসেবে পরিচিত। রাজবাড়ী থেকে বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন একটি আন্তঃনগর সহ ১৩টি ট্রেন চলাচল করে। রাজবাড়ীতে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে রেল অনেক বেশি জনপ্রিয়। প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করে থাকে ট্রেনগুলোতে। রাজবাড়ী থেকে চারটি রুটে চলাচল করে ট্রেন। রাজবাড়ীর পূর্ব দিকে রাজবাড়ী-গোয়ালন্দ ঘাট রুটে রয়েছে পাঁচুরিয়া জং, গোয়ালন্দ এবং গোয়ালন্দ ঘাট স্টেশন। এর মধ্যে গোয়ালন্দ রেলস্টেশনটিতে স্টেশন মাস্টার না থাকায় তা ক্লোজ ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে বহু আগেই। রাজবাড়ীর পশ্চিমে রাজবাড়ী -পোড়াদহ রুটে রাজবাড়ী অংশের মধ্যে রয়েছে সূর্যনগর, বেলগাছি, কালুখালী জং, পাংশা ও মাছপাড়া স্টেশন। এর মধ্যে সূর্যনগর, বেলগাছি ও মাছপাড়া স্টেশন বন্ধ রয়েছে লোকবলের অভাবে। এসব স্টেশনে ট্রেন শুধু থামে। টিকিট বিক্রি সহ অন্যান্য কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। ক্লোজ ডাউন হয়ে থাকা স্টেশনগুলোতে টিকিট বিক্রি না হওয়ায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এদিকে ২০১৩ সালে পুনঃ চালু হওয়া কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া প্রায় ৮০ কিলোমিটার রেলপথে রয়েছে ১৩টি স্টেশন। রামদিয়া, বহরপুর, আড়কান্দি, নলিয়া গ্রাম, মধুখালী, ঘোড়াখালী, সাতৈর, বোয়ালমারী, সসরাইল,বেসপুর, কাশিয়ানী ও ভাটিয়াপাড়া। এর মধ্যে মধুখালী, বোয়ালমারী ও ভাটিয়াপাড়া স্টেশনে মাস্টার রয়েছে। বাকীগুলোতে এখনও পর্যন্ত স্টেশন মাস্টার পদায়ন করা হয়নি। ২০১৪ সালে পুনঃ চালু হওয়া রাজবাড়ী-ফরিদপুর রেলপথের স্টেশনগুলোতেও বিরাজ করছে একই সমস্যা। এ রুটে পাঁচুরিয়া জং, খানখানাপুর, বসন্তপুর, আমিরাবাদ, অম্বিকাপুর ফরিদপুর নামে ছয়টি রেলস্টেশন রয়েছে। যার মধ্যে শুধুমাত্র পাঁচুরিয়া ও ফরিদপুর স্টেশনে মাস্টার রয়েছেন। রাজবাড়ী-ফরিদপুর ও রাজবাড়ী-ভাটিয়াপাড়া রেলপথের ২২ টি স্টেশনে ৬৪ জন মাস্টারের স্থলে রয়েছেন মাত্র ১৫ জন। রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার তন্ময় কুমার দত্ত জানান, লোকবল সংকটের কারণে প্রতিনিয়ত তাদেরকে হিমশিম খেতে হয়। বন্ধ হয়ে থাকা স্টেশনগুলোতে ক্রসিং বা সিগন্যাল দেয়া যাচ্ছে না। এতে করে একটি ট্রেনের সাথে অন্য ট্রেনের ক্রসিং দিতে সময় ব্যয় হচ্ছে বেশি। যে ট্রেনের ক্রসিং এক স্টেশন আগে হতে পাতো বন্ধ থাকার কারণে সেটি পরের স্টেশনে দিতে হচ্ছে। এতে করে ট্রেনগুলির শিডিউল রক্ষা করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (পাকশী) আব্দুলস্নাহ আল মামুনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লোকবল সংকটের কারণে ট্রেন বেশিরভাগ সময়ই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। আমরা প্রতি মাসে লোকবলের সংকটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে জানানো হয়েছে।