রাঙামাটিতে লঞ্চ চলাচল শুরু

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, রাঙামাটি
তীব্র দাপদাহ রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে অস্বাভাবিকভাবে পানি কমে যাওয়ায় হ্রদের নাব্য হ্রাস পেয়ে বরকল, জুরাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর এবং বাঘাইছড়িসহ পাঁচ উপজেলায় গত আড়াই মাস ধরে নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছে জেলা নৌ-পরিবহন লঞ্চ মালিক সমিতি। শনিবার থেকে বরকল, জুরাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা সদরে মালিক সমিতির লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। হ্রদে পানি না থাকায় বাকি নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় এখনো লঞ্চ সার্ভিস চালু করতে পারেননি বলে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বৃষ্টি হয়ে পানি বাড়লে ওই দুই উপজেলায় সমিতির লঞ্চ চালু করা হবে। জানা যায়- দক্ষিণ এশিয়ার সর্ব বৃহৎ কৃত্রিম হ্রদ হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদ। ১৯৬০ সালে এই কৃত্রিম হ্রদটি যে গভীরতা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল, তা প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে বন্যায় উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নেমে এসে পলি জমে হ্রদের গভীরতা হ্রাস করেছে। হ্রদের গভীরতা হ্রাস পেয়ে বিভিন্ন স্থানে চর জেগে উঠেছে। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে সঠিকভাবে বৃষ্টিপাত না হলে হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদটির সৃষ্টির ৫৯ বছরেও সরকারের পক্ষ থেকে হ্রদটিতে জমে থাকা মাটি খনন কিংবা ড্রেজিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি অধ্যাবধি। যার কারণে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে পলি জমে হ্রদটি ভরাট হওয়ায় এই করুণ অবস্থা বিরাজ করছে। এই হ্রদটি শিগগিরই খনন কিংবা ড্রেজিং করা না হলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদটি হারিয়ে যাবে। এর ফলে মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও জীববৈচিত্র্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা। জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে আট উপজেলায় জেলা সদর থেকে সড়কপথে যোগাযোগের ব্যবস্থা থাকলেও বরকল ও জুরাইছড়ি এই দুই উপজেলায় জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একমাত্র নৌপথ ছাড়া কোনো সড়ক পথ নেই। বরকল উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শ্যামরতন চাকমা ও জুরাইছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে প্রতিবছর হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে বরকল ও জুরাছড়ি দুই উপজেলার মানুষদের উপজেলা সদর থেকে ইউনিয়নে কিংবা জেলা সদরে যাতায়াত করতে অর্বণনীয় দুঃখ-কষ্ট ভোগ করতে হয়। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় লঞ্চ চলাচল করতে না পারায় গত আড়াই মাস ধরে এই দুই উপজেলার মানুষদের ছোট ছোট ট্রলার বোটে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।