রংপুরে মন্থনা পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০১৯, ০০:০০

আবেদুল হাফিজ, রংপুর
রংপুরে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের জলাধারটির একাংশ ভরাট করে মার্কেট নির্মাণের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এ নিয়ে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের মধ্যে দেখা দিয়ে অসন্তোষ। এটি রক্ষায় গঠন করা হয়েছে মন্থনা পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জায়গাটি ছিল মন্থনা জমিদারের কাচারি বাড়ি। এখান থেকে আদায় হতো খাজনা। সেখানে রয়েছে প্রায় ৫ একর আয়তনের একটি বিশাল পুকুর। সেসময় শেষ জমিদার ছিলেন ভবতারিনী দেবীর দত্তক ছেলে ভুপেন্দ্র নারায়ণ। এর আগে ১৩০৫ থেকে ১৩৩০ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত জমিদার ছিলেন ভবতারিনী দেবী। ১৯৫০ সালে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর ওই জায়গাটি রংপুরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের আওতায় চলে আসে। ফায়ার সার্ভিস আগুন নির্বাপনে পুকুরটির পানি ব্যবহার করে থাকে। তখন থেকে এটি মন্থনা জমিদার পুকুর হিসেবে ঐতিহ্য বহন করে আসছে। ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের দাবি, তাদের পুকুরের পশ্চিমাংশে ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। এমনকি পয়ঃনিষ্কাশনের পানিতে পুকুরটির পানি হচ্ছে দূষিত। এ থেকে রক্ষায় পুকুরের পশ্চিমাংশে প্রায় দুই শত ফুট দৈর্ঘ্যের জায়গাটিতে ১৫ শত স্কয়ার ফুটের মার্কেট নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি পুকুরটির চারপাশে তৈরি করা হবে হাঁটাহাঁটির রাস্তা। বাকি অংশ থাকবে জলাধার। মন্থনা জমিদার পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট দীপক কুমার সাহা জানান, মার্কেট নির্মাণ করা হলে পুকুরটির ঐতিহ্য নষ্ট হবে। ফলে এটি কালের সাক্ষী হিসেবে থাকছে না। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জলাশয়-পুকুর সংরক্ষণের নির্দেশনা দিলেও সরকারি কর্মকর্তারা তা মানছেন না। তিনি এটিকে পরিবেশের ক্ষতি হিসেবে দেখছেন। তিনি ঐতিহ্যবাহী মন্থনা জমিদার পুকুরটি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীসহ সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন। সরজমিনে দেখা গেছে, নগরীর জিএল রায় রোডের ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স অবস্থিত। ফায়ার সার্ভিসের পশ্চিম পাশে পুকুরের দেড়শত মিটার জায়গায় খনন করা হয়েছে। তবে আন্দোলনের কারণে এখন খননকাজ বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, সর্বস্তরের মানুষ ফায়ার সার্ভিস অফিসের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। মন্থনা পুকুর রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট দীপক কুমার সাহার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ আফজাল, আওয়ামী লীগ জেলা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সিপিবি নেতা শাহাদাত হোসেন প্রমুখ। রংপুর ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক ইউনুস আলী মন্থনা জমিদার পুকুরটির পশ্চিম পাশে মাটি ভরাট করে সেখানে ঘর নির্মাণের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, পুকুরের ঐতিহ্য বজায় রেখেই মার্কেটটি নির্মাণ করা হচ্ছে।