কালিয়াকৈরে বর্জ্যে দূষিত নদীর পানি

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০১৯, ০০:০০

মো. ইমারত হোসেন, কালিয়াকৈর
গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বিভিন্ন শিল্পকারখানার বর্জ্যযুক্ত বিষাক্ত পানি ফসলি জমিসহ নদ-নদীর পানি দূষিতসহ নষ্ট করছে পরিবেশ। পরিবেশকে রক্ষার জন্য সরকারিভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের নেই কোনো প্রশাসনিক উদ্যোগ। পরিবেশ বিপর্যয়ের মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে উপজেলাবাসী। কালিয়াকৈর উপজেলায় ছোট-বড় প্রায় তিন শতাধিক শিল্পকারখানা রয়েছে। শিল্পাঞ্চল হওয়ায় যত্রতত্র রয়েছে শিল্পবর্জ্যসহ পৌরসভার পরিত্যক্ত ময়লার ভাগাড়। মিলকারখানার বর্জ্যযুক্ত বিষাক্ত পানি ও পরিত্যক্ত ময়লার দুর্গন্ধে পৌর এলাকায় রাস্তায় জনচলাচল প্রায় অযোগ্য হয়ে উঠেছে। উপজেলার মৌচাক, সফিপুর, ভান্নারা সুরিচালা, পলস্নীবিদু্যৎ চন্দ্রা, বাড়ইপাড়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর শিল্পকারখানা গড়ে উঠেছে। এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন এসব শিল্পকারখানার বর্জ্যযুক্ত বিপুল পরিমাণ পানি নিষ্কাশন হচ্ছে। ওই পানি পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন ফসলি জমিতে গিয়ে জমা হচ্ছে এবং পরে তুরাগ নদে গিয়ে পড়ছে। এতে ওই বর্জ্যযুক্ত বিষাক্ত পানির ফলে নদীর মাছ, শুশুক, ঝিনুক ব্যাঙসহ নানা জলজ প্রাণী মারা যাচ্ছে। এছাড়া নদীর পানি ফসলি জমিতে সেচকার্যসহ পারিবারিক কাজের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিষাক্ত পানি মানুষের গায়ে লাগলে শরীর চুলকানিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জাহাঙ্গীর আলম নামের এক কৃষক জানান, মকস বিলে তার কিছু জমি রয়েছে। আগে ওই জমিতে ভালো ধান উৎপাদন হতো। মিলের পচা পানিতে সব নষ্ট হয়ে গেছে। জেলে সম্প্রদায়ের হরিদাস জানান, আগে তারা বিল ও নদী থেকে মাছ ধরে জীবনযাপন করত। কারখানার পচা পানি নদ-নদীতে পড়ে নদীর সব মাছ মরে গেছে। এখন আর মাছ পাওয়া যায় না। অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হয়। প্রতিটি কারখানায় ওয়াটার ট্রিটমেন্ট পস্ন্যান্ট (ইটিপি) থাকার কথা থাকলেও অনেক কারখানায় ইটিপি পস্ন্যান্ট নেই। আবার অনেক কারখানায় থাকলেও তা বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। ইটিপি পস্ন্যান্ট চালালে অনেক অর্থ খরচ হয়। এ কারণে কারখানা কর্তৃপক্ষ পস্ন্যান্ট বন্ধ রেখে বর্জ্যযুক্ত পানি পরিশোধন না করেই বর্জ্যযুক্ত পানি নিচু জমিতে ছেড়ে দিচ্ছে। এ ব্যাপারে কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমিন জানান, এ উপজেলায় যোগদানের শুরু থেকেই তিনি পরিবেশ বিষয় নিয়ে সোচ্চার রয়েছেন। ইটভাটাসহ যে সকল শিল্পকারখানার ধোঁয়া পরিবেশের ক্ষতি কওে, এমন কোনো কারখানার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া কাউকে তিনি লাইসেন্স প্রদান করেননি। পাশাপাশি যেসব লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা বা শিল্পকারখানা রয়েছে অতিসত্বর ওই সকল ইটভাটাসহ শিল্পকারখানার বিরুদ্ধে ড্রাইভ দেয়া হবে। এছাড়া প্রত্যেকটি কারখানায় ইটিপি ব্যবহার বাধ্যতামূলক। যেসব শিল্পকারখানায় ইটিপি পস্ন্যান্ট রয়েছে ওই পস্ন্যান্ট রান করছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।