মানবেতর জীবনযাপন করছেন সীতাকুন্ডের ৩ হাজার জেলে

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০১৯, ০০:০০

সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা
সরকারি ঘোষণায় সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধে মানবেতর জীবনযাপন করছে সীতাকুন্ডের উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত প্রায় তিন হাজার জেলে। ভরা মৌসুমে সাগরে মাছ ধরতে না পারায় বর্তমানে চরম দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন এখানকার জেলেরা। একদিকে দাদন ব্যবসায়ী ও এনজিও থেকে নেয়া চড়া সুদের চাপ, অন্যদিকে সাগরে যেতে সরকারের নিষেধাজ্ঞায় বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এখানকার জেলেপাড়াগুলোতে। সুদিনের প্রত্যাশায় প্রতিদিন জীবন বাজি রেখে সাগরে মাছ ধরতে গেলেও ফিরছেন খালি হাতে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার ফলে সাগরে মাছ ধরতে না পারার কারণে সময়মতো টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে অনেকে জেলেকে লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড, মুরাদপুর, বানুর বাজার, ভাটিয়ারী, শীতলপুর, বারআউলিয়া, কুমিরা, ফৌজদারহাট, বাঁশবাড়িয়া, পশ্চিম সৈয়দপুর এলাকার জেলেপাড়ার জেলেরা ঘরে বসে অলস সময় পার করছেন। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় অনাহারে, অর্ধাহারে চরম কষ্টের মধ্যদিয়ে দিন অতিবাহিত করছে জেলে পরিবারগুলো। কুমিরা জেলে সর্দার বাবুল জলদাস বলেন, প্রতিবছর ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এবার তা বাড়িয়ে ৬৫ দিন ঘোষণা করেন সরকার। এতে ভরা মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন জেলেরা। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় অলস সময় পার করছেন জেলেরা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় নিজেদের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার পাহারা দিতে সাগর পাড়ে ভিড় জমান জেলেরা। আবার কেউবা অলস সময় অতিবাহিত করতে তাস ও লুডু খেলায় মত্ত রয়েছেন। বাড়বকুন্ড জেলে পলস্নীর সদ্দার কালাচাঁন জলদাস জানান, ভরা মৌসুমে সাগরে মাছ ধরা বন্ধের ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন জেলেরা। এখানকার জেলেরা বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে জাল, ইঞ্জিন, নৌকা, ডিজেলসহ যাবতীয় সরঞ্জাম ক্রয় করলেও সাগরে মাছ ধরতে না পারায় টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ার কারণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে জেলেদের। এতে একদিকে দাদনদারের চাপ, অন্যদিকে অব্যাহতভাবে সাগর থেকে খালি হাতে ফিরে আসার কারণে ইতোমধ্যে অনেক জেলে পরিবার নিয়ে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ভরা মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধে এখানকার জেলেরা অর্থাভাবে চরম দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।