ব্রাহ্মণবাড়িয়া শয্যা সংকটে সেবা ব্যাহত

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেনারেল হাসপাতালে শষ্যা সঙ্কটে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক রোগী -যাযাদি
দালাল ও বে-সরকারি অ্যাম্বুলেন্স মালিকদের দৌরাত্ম্য, প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও শয্যা না থাকায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে এই হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ ও অর্থপেডিক বিশেষজ্ঞ না থাকায় রোগীদের বিপুল টাকা খরচ করে প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ৫৭জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলে বর্তমানে রয়েছে ৪৭ জন চিকিৎসক। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের দুইজন শিশু বিশেষজ্ঞ, ১ জন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও ১ জন অর্থপেডিকস বিশেষজ্ঞের পদ খালি রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বর্তমানে প্রতিদিন হাসপাতালে গড়ে ১ হাজার ২শ থেকে দেড় হাজার রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে তিন থেকে সাড়ে তিনশ রোগীকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ২৫০টি শয্যা থাকায় বাকি রোগীকে হাসপাতালের ফ্লোরে চাঁটাই ফেলে থাকতে হয়। হাসপাতালের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে দালাল। প্রতিদিন সকাল ৮টার পর থেকেই চিহ্নিত দালালরা এসে হাসপাতাল কম্পাউন্ডে জড়ো হয়। রোগীরা টিকিট কাটার জন্য কাউন্টারে দাঁড়ালে অনেক সময় রোগীবেশী চোরেরা তাদের পকেট থেকে টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এছাড়া দালালদের খপ্পরে পড়ে গ্রামের সহজ-সরল লোক বিভিন্ন সময় প্রতারিত হচ্ছে। সরেজমিন হাসপাতালে ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের বাথরুমগুলোর অবস্থা একেবারেই করুণ। পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের অভাবে রাতের বেলা হাসপাতালে ভুতুড়ে অবস্থার সৃষ্টি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজন জানান, হাসপাতালের বাথরুমগুলো ব্যবহার অনুপযোগী। বাথরুমগুলোতে পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায় না ও প্রতিনিয়ত পরিষ্কার করা হয় না। এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন জানান, হাসপাতালে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। টিকিট কাউন্টারের জায়গা ছোট হওয়ায় রোগীদের টিকিট কাটতে হয় কষ্ট করে। তিনি বলেন, প্রতি মাসে গড়ে হাসপাতালে ৯০ থেকে ১০০টা সিজারিয়ান অপারেশন করা হচ্ছে। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪শ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে, গড়ে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে তিন থেকে সাড়ে তিনশ রোগী। ডা. শওকত হোসেন আরও বলেন, বেডের চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি থাকায় কিছু রোগীকে ফ্লোরে থাকতে হয়, তবে কিছুদিনের মধ্যে হাসপাতালে আরও ৭০টি বেড বিছানো হলে এই সমস্যা কেটে যাবে। তিনি হাসপাতালে আরও ভবন বৃদ্ধি করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান।